আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য কারামুক্ত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার, আটক, হত্যা ও কারাগারে নির্যাতন করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কারামুক্ত হয়ে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে তিনি এ কথা বলেন।
‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করা হবে’—উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যত বেশি অত্যাচার করবে তত বেশি মানুষ ফুঁসে উঠবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করবে। আন্দোলন আরও তীব্র করতে হবে, তার মাধ্যমে এদের পরাজিত করতে হবে।
কারাগারের ভেতর বিএনপি নেতাকর্মীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকে শুধু দু’জন বেরিয়ে এসেছি। এখনও আমাদের হাজারও নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। তারা অমানবিক কষ্ট শিকার করছেন। তারা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। একটা সেলের ভেতর ৬-৭ জনকে রাখা হচ্ছে। তাদেরকে বের হতে দেওয়া হয় না। আজ সারা দেশটাকে এরা একটা কারাগারে পরিণত করেছে।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা ভেবেছিল গ্রেপ্তার করে, কারাগারে আটকে রেখে, বিএনপির অফিস ভেঙে-হামলা করে, অত্যাচার করে, গুম করে ও গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের আন্দোলনকে বন্ধ করে দেবে। এর আগে আমাদের প্রায় ১২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আন্দোলন কি বন্ধ হয়েছে? হয়নি, বরং আরও শক্তিশালী হয়েছে, বেগবান হয়েছে।
গোটা বাংলাদেশ আজ প্রতিবাদে প্রকম্পিত হয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, গ্রেপ্তার করে, আটক করে, কষ্ট দিয়ে ও হত্যা করে আমাদের দমন করতে পারবে না। এই দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। মানুষ অধিকার আদায়ের জন্য নেমে পড়েছে।
বিএনপির পিছু হটবার আর কোনো পথ খোলা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের শুধু সামনে এগিয়ে চলতে হবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।
খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন সময়ের ব্যাপার উল্লেখ করে সদ্য কারামুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আপনাদের চাপের মুখে সরকার তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবেন।
এসময় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রকিবুল আলম মঞ্জু, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিএনপির ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগের দিন ৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে নিজ-নিজ বাসা থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এক মাস পর আজ জামিনে মুক্তি পান এই দুই নেতা।
Discussion about this post