ফারুক আহমদ, উখিয়া –
উখিয়া উপজেলার রুমখা পালংস্থ ধুরুংখালী এলাকায় আদালতের আদেশ অমান্য করে সৌদি প্রবাসী হাজী সোনা আলীর ভোগদখীয় জমি জবর দখলের অপচেষ্টার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভোররাতে একদল ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী ধান চাষের চারা রোপন করে জোরপূর্বক জমি দখলে চেষ্টায় ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
খবর পেয়ে উখিয়া থানার উপ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় পুলিশ পোর্স নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দখলকারীদের কে তাড়িয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানা গেছে ।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ধুরুমখালীর হাজী পাড়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আহমদ প্রকাশ শফর হাজির পুত্র হাজী সোনালী আলী ও সহোদর হাজী মমতাজ উদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নেন ভুক্তভোগীরা। গত ১৩ জানুয়ারি হাজী সোনা আলী ও হাজী নজির আহমদের পুত্র নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে কক্সবাজার অতিরক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ধারা চেয়ে মামলা দায়ের করেন। যার এম আর মামলা নাম্বর ৮১/২০২১।
এতে বিবাদী করা হয় মমতাজ উদ্দিন, বাদশা মিয়া আব্দুর রহমান ও আহমদ হোসেন সহ ৬ জন কে।
এদিকে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে এনে বিরোধীয় জায়গাটির সরজমিন তদন্তপূর্বক মতামত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সহকারী কমিশনার ভূমি কে বলা হয়। অপরদিকে উক্ত জায়গায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। যার স্মারক নম্বর ৮৪ এবং তারিখ ১৩/১/২০২১ ইংরেজি।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, মৌজা রুমখা পালং এর সৃজিত বিএস খতিয়ান নম্বর ১৬২১ এর সৃজিত বিএস দাগ নম্বর ৭২৯, ৭৩০, ৭৩১, ৬৯১ দাগাদির আন্দরে পয়েন্ট ৪৪৯৮ একর জমি এবং সৃজিত বিএস খতিয়ান নম্বর ১৬৫৩ এর বিএস দাগ নম্বর ৭৩৮ ও ৭৪০ এর পয়েন্ট ১২৫ একর মোট পয়েন্ট ৫৭৪৮ একর জাগায় মালিক হচ্ছে হাজী সোনা আলী। উক্ত জমি মমতাজসহ প্রতিপক্ষ গং ক্ষমতার প্রভাব দেখি জবর দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে আদালতের আদেশ অনুযায়ী উখিয়া থানা পুলিশ গত ১৫ জানুয়ারী মমতাজ উদ্দিনসহ বিবাদীদেরকে বিরোধীয় জমিতে প্রবেশ বারিতসহ কোন প্রকার দখল-বেদখল, অপসারণ, নির্মাণ, রূপ পরিবর্তন না করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন।
অপরদিকে মামলার বাদী সোনা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অমান্য গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মমতাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী ধানের চারা রোপন করে জোরপূর্বক জমি দখলের অপচেষ্টা চালায়। বাদী নাসির উদ্দীন বলেন, বাঁধা প্রদান করলে আমাদেরকে মারধরের হুমকি ধমকি দেয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে জবর দখলকারীদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আদালতের আদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিরোধীয় জমিতে যাতে কেউ দখল করতে না পারে সে লক্ষ্যে পুলিশ বাঁধা প্রদান করেছেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে পরামর্শ দেন বলে তিনি জানান।
গ্রামবাসীরা জানান, হাজী মমতাজ উদ্দিন ও হাজী সোনা আলী আপন সহোদর।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, বড় ভাই হাজী মমতাজ উদ্দিন বলেন, আমার মালিকানাধীন জায়গায় চাষাবাদ করা হচ্ছে। কারো জমি দখলের চেষ্টা করা হয়নি।
ছোট ভাই সোনা আলীর বাউন্ডারিতে আমার জায়গা রয়েছে। ছোট ভাই হাজী সোনা মিয়া বলেন, সৃজিত খতিয়ান ও দাগের আন্দরে আমার মালিকানাধীন জায়গা বুঝিয়ে দিলে আমার কোন আপত্তি থাকবে না।
আমি সৌদি আরবে অবস্থান করার সুযোগ নিয়ে বড় ভাই মমতাজ উদ্দিন জোরপূর্বক আমার জায়গা জবরদখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছেন প্রবাসী ভুক্তভোগী পরিবার।
Discussion about this post