নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের উখিয়ার তুতুরবির ও হরিণমারা এলাকায় ওরা ১৩ জনের অবৈধ মাটি ও বালি পাচারকারি এবং ডাম্পার মালিক সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে পুরো উখিয়া। এদের রয়েছে প্রায় শতাধিক ডাম্পার। বনবিভাগ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে একেরপর এক পাহাড় কর্তন, মাটি পাচার, ইজারা ব্যতিরেখে খাল থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
সরজমিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এ উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল ও হরিণমারা ঘুরে বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে এমন তথ্য উঠে আসে৷
গত (বুধবার) কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হিজলীয়া (পালং গার্ডেন) এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বেপরোয়া ডাম্পারের ধাক্কায় নিহত হন উখিয়া উপজেলা পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর মো. শাহ রেজা।
এ ঘটনার পর থেকে সকলের বিবেক ন্যাড়া দেয়। কেউ প্রকাশ্যে, কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবৈধ ডাম্পার মালিক ও মাটি ও বালি পাচারকারি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা যায়।
গণমাধ্যমকর্মী জসিম আজাদ তার ফেসবুকে লিখেছেন ১৩ জনের অবৈধ মাটি ও বালি পাচারকারি এবং ডাম্পার মালিক সিন্ডিকেটের তথ্য অনুসন্ধানে উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাব এর সংবাদকর্মীরা এখন মাঠে। সাদা পোষাকে তোলে নেওয়া ও ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট করার হুমকিতে কাজ হবে মশাই।
উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পলাশ বড়ুয়া লিখেছেন, উখিয়ায় অবৈধ ডাম্পার মালিক হাফেজ রেজার নেতৃত্বে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট এবং থানা ম্যানেজ হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। যার ফলে প্রতিদিন প্রাণহানিতেও নিয়ন্ত্রনহীন ডাম্পার।
সেখানে মোঃ আবছার কক্স কমেন্টস করেছেন, যতদিন মাটি কাটার শ্রমিক দ্বারা গাড়ি চালানো হবে তথদিন পযন্ত কোন গাড়ি বা মানুষ নিরাপদে থাকবে না।
এর সুত্র ধরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জানাযায় ওরা ১৩ জনের সিন্ডিকেটের কথা৷ তাদের সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছে-রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণ মারা ও বাগানের পাহাড় এলাকার মাহম্মদ কোম্পানি, গফুর কোম্পানি, বিকাশ মাহমুদুল হক, ছৈয়দ করিম, মাস্টার কবির আহমেদ, বদু প্রকাশ ফিটিং বদু, শাহ আলম, খালখাছা পাড়ার মোঃ মুস্তাফিজ, মুফিজ, জাদিমোরা এলাকার সাইফুল কবির, আলিমোরার জামাল, হিজলিয়া মাজর পাড়া এলাকার মৌলভী রেজা। তাদের সহযোগি হিসেবে রয়েছে হিজলিয়ার আব্দুল্লাহ, হেলাল, রশিদ, উত্তর পুকুরিয়ার, প্রফেসর বেলাল, তুতুরবিলের সালাহ উদ্দিন, রত্নাপালং এলাকার তাসিফ চৌধুরী, কুতুপালং এলাকার মংচানু বড়ুয়া। এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শতাধিক অবৈধ ডাম্পার (মিনি ট্রাক)।
তাদের মধ্যে আবার আলাদা ভাবে বনবিভাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্যদের মাঝে। এলাকা ভিত্তিক যারা দায়িত্বে আছেন তাদের মধ্যে তুতুরবিল বনবিভাগ নিয়ন্ত্রণ করেন মোঃ নুরু ও মোঃ জামাল উদ্দিন, বাগানের পাহাড় নিয়ন্ত্রণ করেন, বদু ও মাহম্মদ, হরিণ মারা এলাকার নিয়ন্ত্রণ করেন গফুর কোম্পানি ও আক্তার।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা নির্বাহী
অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে বেশ কয়েক বার অভিযান চালিয়ে ডাম্পার গাড়ী জব্ধ করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। হরিণমারা ও তুতুরবিল এলাকার অবৈধ ডাম্পার মালিক ও মাটি পাচারকারি এবং বালি উত্তোলনকারিদের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
Discussion about this post