বিশেষ প্রতিনিধি :
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরির নামে স্থানীয়দের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে দেশি-বিদেশী দেড় শতাধিক এনজিও, আইএনজিও সংস্থা। তারা লোক দেখানো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কক্সবাজার জেলার বাহির থেকে ছেলে/মেয়েদের নিয়ে এসে চাকরি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে স্থানীয় একজন চাকরি প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
মোঃ সোহেল চৌধুরী নামের ওই চাকরি প্রার্থী অভিযোগ করে জানান, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত Community Based Officer হিসেবে Terre des hommes Organisation এ কর্মরত ছিলেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ দেখিয়ে তারা ৬জনকে কৌশলে বাদ দিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত ২৯/১২/২০২০ ইং তারিখ উখিয়া অফিসের শূণ্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৯/০১/২০২১ ইং তারিখ পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করেন সে। ই-মেইলে টেস্ট এন্ড ভাইভা উল্লেখ থাকলেও তারা সরাসরি ভাইভা পরিক্ষা নিয়ে তাদের কার্যক্রম শেষ করেন বলে অভিযোগ তার।
সে অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, ভাইভা পরীক্ষার পর ওই আইএনজিও’র চাইল্ড প্রোটেকশন এক্টিভিটি কোর্ডিনেটর অর্জুন কুমার ধরের সাথে ৫০ হাজার টাকায় মৌখিক চুক্তি ভিত্তিতে সরল বিশ্বাস ও ব্যক্তিগত দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকার কারনে ৩০ হাজার টাকা দুইজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে নগদ প্রদান করেন। পরবর্তীতে তাকে বাদ দিয়ে বহিরাগত অন্য আরেক জনকে নিয়োগ দেয়।
বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে সে প্রথমে সিনিয়র এইচআর অফিসার মোঃ রওনক রুবায়েদকে অবহিত করেন। তিনি সংঘঠিত লেনদেন নিষ্পত্তি করার জন্য অর্জুন কুমার ধরকে বলিলে তিনি তা অপারগতা প্রকাশ করেন এবং এই বিষয়ে ভবিষ্যতে বাড়াবাড়ি করিলে সোহেলকে মামলা, হামলার হুমকি দেন। ঠিক উল্টো তার বিরুদ্ধে গত ৩১/০১/২০২১ ইং তারিখ একটি সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেন, যার নং-১৩১৭। এরপর থেকে স্থানীয় ছেলে/মেয়েদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চাকরি প্রার্থী স্থানীয় মোঃ সোহেল চৌধুরী এ প্রতিবেদকে অভিযোগ করে বলেন, উখিয়া-টেকনাফের মানুষ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে সে মানবিকতা দেখিয়ে তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ার কারনে বিভিন্ন দেশি-বিদেশী এনজিও, আইএনজিও সংস্থার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমরা যারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় শিক্ষিত ছেলে/মেয়ে রয়েছি আমরা যদি চাকরিতে আবেদন করি তারা প্রতারণা মাধ্যমে আমাদেরকে বাদ দিয়ে বহিরাগত ছেলে/মেয়েদের নিয়োগ দিয়ে থাকে৷ তার প্রতিবাদ করিলে আবার উল্টো মামলা, হামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকে। ইতিপূর্বেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ঠিক তেমনি ভাবে আমার বিরুদ্ধে জিডি করেছে প্রতারক অর্জুন৷ আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে টেরে ডেস হোমস্ ফাউন্ডেশন (টিডিএইচ)’র চাইল্ড প্রোটেকশন এক্টিভিটি কোর্ডিনেটর অর্জুন কুমার ধর’র ব্যক্তিগত নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমার কথা হচ্ছে যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থানীয় ছেলে/মেয়েদের চাকরি দিতে হবে এনজিও বা আইএনজিও সংস্থাকে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ আইএনজিও’র সাথে আমি কথা বলব।
Discussion about this post