বাংলা ট্রিবিউন:
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) এবং উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার সময়সূচি চূড়ান্ত করে তা প্রকাশ করেছে সরকার। আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে এসএসসি এবং ২ ডিসেম্বর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব খালেদা আক্তার স্বাক্ষরিত এই সময়সূচি প্রকাশ করা হয়।
দেশে গেল বছরের মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গেল ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। এরপরই আটকে থাকা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগে ২০২০ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ২০২১ সালের পরীক্ষা যথাসময়ে হয়নি। দীর্ঘদিন পরে এসে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে নৈর্বচনিক বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আগেই আভাস দিয়েছিলেন, এবছর এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। আবশ্যিক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি ও ধর্ম। এর বাইরে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নৈর্বচনিক যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলোর গ্রুপভিত্তিক তিনটি বিষয়ের (ছয় পত্রে) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী সময়সূচি করা হয়েছে।
পরীক্ষাসূচির বিশেষ নির্দেশনায় বলা হয়, কোডিড-১৯ অতিমারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার সময় দেড় ঘণ্টা। এমসিকিউ সিকিউ ও সিকিউ অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনও বিরতি থাকবে না।
সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে সাড়ে ৯টায় অলিখিত উত্তরপত্র এবং বহুনির্বাচনি ওএমআর শিট বিতরণ, সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্র বিতরণ। সকাল সোয়া ১০টায় বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে। আর দুপুর ২টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে দুপুর দেড়টায় অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনি ওএমআর শিট বিতরণ, দুপুর সোয়া ২টায় উত্তরপত্র (OMR শিট) সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে।
পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট থেকে পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে তিনদিন আগে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করবে।
শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যয়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলো সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ পরীক্ষার্থীর ব্যবহারিক খাতা (নোটবুক) এর নম্বর প্রদান করে নম্বরগুলো ২৮ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক খাতার (নোটবুক) নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে পাঠাবে।
পরীক্ষার্থীগণ তাদের নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর (OMR) নামে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনও অবস্থাতেই উত্তপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
পরীক্ষার্থীকে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক খাতার (নোটবুক) নম্বরের অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে। পরীক্ষার্থী কেবল রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্রে বর্ণিত বিষয়/বিষয়গুলোর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনও অবস্থাতেই ভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
কোনও পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিজ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। কোনও ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব ফিচার ফোন (স্মার্ট ফোন ব্যতীত) ব্যবহার করতে পারবেন।
সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও বহুনির্বাচনি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির জন্য একই উপস্থিতি পত্র ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষার ফল প্রকাশের সাতদিনের মধ্যে পুনর্নিরীক্ষার জন্য অনলাইনে এসএমএস-এর মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
Discussion about this post