নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজার পৌরসভার সর্দারপাড়া এলাকার এক কিশোরীকে ধর্ষনের অভিযোগে আদালতে মামলা করে বিপাকে পড়েছে পরিবার। আসামী পক্ষের হুমকি-ধমকিতে বিগত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছেন। মামলার বাদী এ অভিযোগের কথা জানিয়েছেন।
অপরদিকে মামলার অন্যতম স্বাক্ষী মো. রুবেল উদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে আসামী পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত সোমবার কক্সবাজার সদর থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সর্দার পাড়ার ওই কিশোরীকে ধর্ষনের অভিযোগে গত ৭ জানুয়ারী কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশী দরখাস্ত করেন কিশোরীর মা। এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২২ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তাঁর ১৫ বছর বয়সী কন্যাকে মুখে কাপড় চেপে জোরপূর্বক সিএনজি অটোরিক্সাযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায় মো. জুবাইর, উৎপল বড়–য়া ও সুজিব বড়–য়া নামে তিন যুবক। কলাতলীর পাহাড়ি এলাকার একটি ঘরে নিয়ে তাকে পালাক্রমে ধর্ষন করে তারা। পরদিন সকালে কৌশলে তাদের কবল থেকে পালিয়ে আসে কিশোরী। পরে ঘটনা সম্পর্কে তার মাকে বিস্তারিত জানায়।
মামলার বাদী অভিযোগ করে বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে আসামী পক্ষের লোকজন নানাভাবে আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমরা আতংকে দিন কাটাচ্ছি। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের সহযোগীতা চাই।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে স্বাক্ষ্য দেওয়ায় গত ২৯ জানুয়ারী দিবাগত রাত পৌনে ১২ টার দিকে মো. রুবেল উদ্দিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে আসামী পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসা শেষে ফেরার পর রুবেল উদ্দিন গত সোমবার কক্সবাজার থানায় একটি লিখিত এজাহার জমা দিয়েছেন। তবে এজাহারটি এখনও মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
মো. রুবেল উদ্দিন বলেন, ‘আমি ধর্ষন মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় মামলার আসামীরা আমাকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে স্বাক্ষ্য দেওয়ায় গত ২৯ জানুয়ারী রাতে আসামী পক্ষের লোকজন আমার উপর হামলা করে। ওই রাাতে কক্সবাজার শহর থেকে ব্যক্তিগত কাজ শেষে টমটম গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন চৌধুরী পাড়া এলাকার নির্মাণাধীন চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের সামনে এলে পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা কমল বড়ুয়া, উৎফল বড়ুয়া, সুজিব বড়ুয়া, প্রকাশ বড়ুয়া ও মো. জোবাইর গাড়ির গতিরোধ করে হামলা চালায়। এসময় তাকে ছুরিকাঘাত ও লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে গুরুতর জখম করে হামলা কারীরা। এসম পথচারী লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আমাকে উপস্থিত লোকজন উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেফার করা হয়। এখনও হামলাকারীরা আমাকে নানাভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় আমি কক্সবাজার থানায় লিখিত এজাহার জমা দিয়েছি গত সোমবার ।’
ধর্ষন মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর পরিদর্শক মো. কাউসার বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ওই মেয়ের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। ঘটনার আরও নানা দিক আমরা তদন্ত করছি। এখনও তদন্ত কাজ শেষ হয়নি। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কথা বলতে পারবো।’
Discussion about this post