অনলাইন ডেস্ক:
অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইং মিন্টসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতার করে সামরিক শাসন জারি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে সু চি ও মিয়ানমারের ভাগ্য একই সুতোয় ঝুলে গেল।
৭৫ বছর বয়সি সু চি দীর্ঘদিন আটকাবস্থায় কাটিয়েছেন। তার কয়েক দশকের সংগ্রামের পর ২০১৫ সালে মিয়ানমারে সামরিক শাসন সরিয়ে গণতন্ত্র আসে।
কিন্তু মাত্র এক মেয়াদ ক্ষমতায় থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে আরও বেশি আসন নিয়ে ফিরে এসেই সামরিক অভ্যুত্থান ও গ্রেফতারের মুখে পড়লেন সু চি। খবর এএফপি, বিবিসি, ইরাওয়াদ্দির।
সু চির বাবা অং সানের স্বপ্ন ছিল মিয়ানমারের স্বাধীনতা অর্জন। ব্রিটিশ ও জাপানি বাহিনীর সঙ্গে লড়ে সেই আসা পূর্ণ করেছেন তিনি। স্বাধীন মিয়ানমার প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তারপর থেকে সামরিক শাসনের জাঁতাকলে মিয়ানমার। মেয়ে সু চির স্বপ্ন বাবার স্বাধীনতা এনে দেওয়া দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা। এ জন্য ১৯৮৮ সালে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নামে দল গঠন করেন।
১৫ বছরের গৃহবন্দিত্ব ও সংগ্রামের পর ২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসে। প্রথমবার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চলতে হয়।
দ্বিতীয় বার ৪৭৬ আসনের মধ্যে ৩৮৬টি পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় এনএলডি। সুযোগ আসে স্বপ্নের গণতন্ত্রের পক্ষে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার। কিন্তু সংসদ প্রথম অধিবেশন বসার আগেই সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন সু চি।
শারীরিকভাবে ফিট থাকলেও বয়সজনিত কারণে সু চির ভাগ্যে কী ঘটে সেটা সময়ই বলে দেবে। একই কথা প্রযোজ্য খোদ মিয়ানমারের বেলায়ও।
কারণ সু চি ছাড়া সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো তেমন কোনো জনপ্রিয় নেতা নেই। ব্যাপক জনপ্রিয় সু চি ‘মাদার সু’ হিসাবে পরিচিত। তার জন্ম ১৯ জুন ১৯৪৫। বর্তমানে বয়স ৭৫ বছর।
সু চিকে আটক করে সামরিক শাসন জারির পর সেনাবাহিনী এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এক বছরের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে।
কিন্তু সব সামরিক বাহিনীই অভ্যুত্থানের পর এসব কথা বলে থাকে। ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ জোরদার করে জেঁকে বসে ক্ষমতায়। এ কারণে সু চির ভাগ্য নিয়ে উদ্বেগ।
শেষ পর্যন্ত তিনি দ্রুত মুক্তি পাবেন? তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হবে? তার আটকাদেশ কি আগেরবারের মতো দীর্ঘমেয়াদি হবে?
পশ্চিমা দেশগুলোর মতো চীন ও ভারত কি মিয়ানমারের গণতন্ত্রের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেবে? এসব প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত।
এসব বিষয় জানার আগ পর্যন্ত সু চি ও মিয়ানমারের ভাগ্য ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে।
Discussion about this post