কক্সবাজার সদরে খুরুশকুলে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিন (২৬) খুন হয়েছেন। এর আগে একদফা হামলার মুখে সম্মেলন কেন্দ্রে ঢুকে মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের কাছে আশ্রয় চান ফয়সাল। এর কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগ নেতারা সম্মেলনস্থল ত্যাগ করলে ফয়সালকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
এই ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম।
রবিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কক্সবাজার খুরুশকুলের ডেইলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফয়সাল উদ্দিন ওই ইউনিয়নের কাউয়ারপাড়া এলাকার মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
প্রত্যদক্ষর্শীরা জানিয়েছেন, রোববার দুপুরের দিকে খুরুশকুল ইউনিয়নের আওতাধীন ২ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলন চলছিল। সেখানে যোগ দিতে যান ফয়সাল উদ্দীন। তাকে সম্মেলন স্থলের বাইরে দেখে ধাওয়া দেয় আজিজ সিকদার ও জহিরের নেতৃত্বে একদল হামলাকারী। ধাওয়া খেয়ে মঞ্চে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে গিয়ে আশ্রয় চান ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল।
এই সময় হামলাকারীরাও তার পিছু পিছু মঞ্চে উঠে যায়। তবে সে সময়ে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করে মঞ্চে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা। সেখানে হামলা করতে না পেরে তারা বাইরে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতারা সভাস্থল ত্যাগ করেন। নিরুপায় ফয়সাল উদ্দীনও সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তখন সেখানে ওৎ পেতে থাকা হামলাকারীরা ফয়সাল উদ্দীনের উপর হামলে পড়ে। তারা তাকে উপর্যপুরি কোপায়।
এসময় তার সাথে আরও কয়েকজনকে কুপিয়ে আহত করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে মুমূর্ষ ফয়সাল উদ্দীনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে আইসিইউতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন বলে জানান কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস বলেন, হামলা চালানোর চেষ্টার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ততক্ষণে হামলা সংঘটিত হয়ে যায়।
নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন, হামলার সময় অদূরেই পুলিশ ছিলো। পুলিশের উপস্থিতিতেই সন্ত্রাসীরা ফয়সালের উপর হামলা করেছে। হামলা করে পুলিশের সামনে বীরদর্পে পালিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা।
একইভাবে আওয়ামী লীগ নেতারাও ফয়সালকে একা ফেলে নিরাপদ দূরত্বে মঞ্চ ত্যাগ করেন বলে ফয়সালের স্বজনদের দাবী।
সভাস্থলে উপস্থিত থাকা কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্ববায়ক ও স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন জানিয়েছেন, এক বছর আগে হামলাকারী আজিজ সিকদারের এক ভাতিজা খুন হয়। সেই মামলার আসামি ছিলেন নিহত ফয়সাল উদ্দীন। পরে তিনি মামলা থেকে বাদ যান। এই ঘটনার জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিন হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কক্সবাজারের বিভিন্নস্থানে সড়কে টাইয়ার জালিয়ে ও সড়ক অবরোধ করে ভিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা এই ঘটনায় পুলিশের গাফেলতিকে দায়ী করেন। তারা বলেন, পুলিশের সামনে এই ঘটনা হয়েছে। পুলিশের ভুমিকা রহস্যজনক বলে জানান তারা।
Discussion about this post