নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মোহাম্মদ উসমান সিকদার (৩৮) নামের একজন ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন।
শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ফজরের নামাজ আদায় করতে মসজিদে যাওয়ার সময় বাড়ির সামনে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর হোসেন এবং টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম।
টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ইয়াবা ও মানব পাচারকারী তালিকাভুক্ত। পুলিশ নিহত ছাত্রলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করছে। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উসমান সিকদারের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রোববার সন্ধ্যায় একটি ইজিবাইক (টমটম) চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এর প্রতিবাদ করেন উসমান শিকদার। এ সময় উপজেলার সাবরাং নয়াপাড়া বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ওরফে খুলু মেম্বারের ছেলে মোহাম্মদ শাকের ও কাটাবনিয়ার মোহাম্মদ কাসিমের ছেলে কেফায়েত উল্লাহ অতর্কিতভাবে উসমান সিকদারের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে মারধর করে আহত করেন।
এরপর উসমান সিকদার বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি অভিযোগ করেন। ওই ঘটনার সূত্রপাত ধরে আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ফজরের নামাজ আদায় করতে মসজিদে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেন।
গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উসমানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আয়ুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে আনার আগে উসমান শিকদার মারা গেছেন। তাঁর বুকে, পেট ও পিঠে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলায় রাখাইন সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে চখিং ওয়ান (৩৯) নামে একজন গৃহবধূ খুন হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী উ ক্য ওয়ান (৪৮) আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তির বাড়ি মিয়ানমারের রাশি ডং এলাকার অং চিন জু র ছেলে।
নিহত গৃহবধূ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ার গ্ৰামের বাসিন্দা মৃত উ সিং ক্য মেয়ে। নিহত গৃহবধূর সংসারের তিনজন ছেলে সন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ হয়ে আসছিল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে স্বামী উ ক্য ওয়ান এর সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জের ধরে চখিংওয়ানকে একাধিক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অপরদিকে, টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল হ্নীলার পানখালী এলাকা থেকে অভিযুক্ত স্বামী উ ক্য ওয়ানকে আটক করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রোমানা রশিদ বলেন, আজ বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে মৃত অবস্থায় একজন নারীকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে তার শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতে চিহ্ন দেখা গেছে।
জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্বামীকে আটক করা হয়েছে। লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
টেকনাফের সাবরাং আবু সিদ্দিক (৩৮) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের উত্তর নয়াপাড়ার বাসিন্দা মৃত ফজল আহমদের ছেলে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঝুলন্ত অবস্থায় নিহতের নিজ বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করেছেন।
এ তথ্যাটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো হাফিজুর রহমান।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানায়, নিহত যুবক দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন। কিছুদিন আগে অসুস্থ ছোট ছেলের চিকিৎসা করতে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তার স্ত্রী সমুদা খাতুন বাবার বাড়িতে চলে যান।
টিনশেড বেড়ার তৈরির ঘরে কোনো ধরনের সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে অনেক ডাকাডাকি করেন। পরে স্থানীয় লোকজন থানায় পুলিশে খবর দিলে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল রানার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পরে পুলিশ তালাবদ্ধ ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করতেই ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। লাশটি উদ্ধার করা হয়।
লাশ উদ্ধারকারী কর্মকর্তা ও টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, মাদক সেবন কারণে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো হাফিজুর রহমান বলেন, নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর। তবে নিহতের শরীরে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
Discussion about this post