সীমান্তের টেকনাফ অপরাধীদের জন্য যেন এক সর্গ রাজ্য। আর এ রাজ্যে নিজেদের অধিপত্য বিস্তার করে একটি চক্র। মরণ নেশা ইয়াবা, মার্ডার, ভূমি দস্যুতা, অপহরণ, মানবপাচার এখানকার প্রতিনিয়ত স্বাভাবিক ব্যাপার।
বলছি টেকনাফ বাহারছড়া, জাহাজপুরা এলাকার মূত কাদের হোসেনের পুত্র চিহ্নিত ভূমি দালাল জুয়াড়ি মোহাম্মদ আলীর দূস্যতা সম্রাজ্যের কথা।
অনুসন্ধানে উঠে আসে, টেকনাফ বাহারছড়া ভূমি অফিসকে জিম্মি করে স্থানীয় দেড় ডজন নিরীহ মানুষের ভোগদখলীয় জায়গা মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রীর নামে ৩০৬১/ ৩৩৭৯/ ২৮৮২/ ২৯৫৯/ ৩৫৭৯ খতিয়ান সহ আরো ৫ থেকে ৬ টি খতিয়ান সৃজন করে নেয়।
জানাগেছে, বাহারছড়া ভূমি অফিসের কথিত কম্পিউটার অপারেটর আবু সায়েদ আত্মীয় হবার সুবাদে এসব খতিয়ান নিজের নামে সৃজন করে।২০১৭ সাল পর্যন্ত মোহাম্মদ আলী একজন চিহ্নিত জোয়াড়ী। শুরুতে মাদক ও জুয়াড়ি হলেও গণহারে মাদক এবং কেসিনোর বিরুদ্ধে মিশনে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঠিক সে সময় কৌশল বদলে নিজেকে বাহারছড়া ভূমি অফিসের কর্মচারি পরিচয়ে অপরাধ আড়াল করে। পরপরই মোহাম্মদ আলী শুরু করে নামজারি করার দালালী এর মধ্যে নিজের নামে এবং স্ত্রীর নামে দখলে বেদখলে হাতিয়ে নিয়েছেন ডজন সৃজিত খতিয়ান। উল্লেখ্য স্ত্রীর নামের খতিয়ানে ঠিকানাও গোপন করে বলে জানা যায়।
কি ভাবে চিহ্নিত ভূমি দালাল আলী বেদখলে নামজারি করে তা জানা মশকিলও বটে। সরকার ঘরহীনদের ঘর দিচ্ছে ঠিক এ সময় ষাটউর্ধ্ব বায়ুবৃদ্ধ বিধবা এক নারী মলিয়া খাতুন থেকে বিভিন্ন কৌশলে বিশাল সুপারি বাগানসহ বসতভিটা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছে বৃদ্ধা মলিয়া খাতুন।
অন্যদিকে মোহাম্মদ আলী বাহারছড়ার ভূমি অফিসকে ব্যবহার করে নামজারির নামে প্রতিনিয়ত হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। মাঝে মাঝে সে বাহারছড়া ভূমি অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ও দেয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। আর এ ভূমি অফিসের বাউন্ডারীর ভেতর রয়েছে এনজিও পরিচালিত একটি ফ্রেন্ডলি স্পেস সেখানেও মোহাম্মদ আলী ক্লাস ফাইভ পাস না করলেও অষ্টম শ্রেণী পাস মর্মে সিকিউরিটির চাকরী পেয়েছে তার নাবালক ছেলে।
তথ্যমতে, আগের কম্পিউটার অপারেটরকে কৌশলে ভূমি অফিস থেকে সরিয়ে দিয়ে তার আত্মীয় হারুনের ছেলে আবু সাইদকে কম্পিউটার অপারেটরের দায়িত্ব বসিয়েছে। আলীর তার্গেট ছিল সাইদকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা নেওয়া এবং গোপন নতীপত্র সরবারহ করা। আবু সাইদ মূলত মোহাম্মদ আলীর হয়ে কাজ করে ভূমি অফিসের কন্ট্রোল রুমে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে আলীর রয়েছে ভূমি অফিসে একক আধিপত্য। যার কারণে আলী রাত্রীযাপনও করে এ ভূমি অফিসে। ভূমি সেবার গুরুত্বপূর্ণ সরকারী অফিসে মোহাম্মদ আলীর মতো চিহ্নিত দালাল কিভাবে রাত্রীযাপন করে তা প্রশ্নই থেকে যায়।
কথিত দালাল মোহাম্মদ আলী ও কম্পিউটার অপারেটর আবু সাইদের রোষানলে পড়া সাবেক অপারেটর রিপন প্রতিবেদকে জানিয়েছে, আলীর বাসা থেকে নিয়ে আসা হয় ভূমি অফিসের উর্ধতন কর্মকর্তার জন্য দু বেলা খাবার, সেই সুবাদে সুযোগের অপব্যবহার করেন মোহাম্মদ আলী, বিভিন্ন বদনাম এবং ভূমি কর্মকর্তার কান ভারি করে আলী আমাকে বের করে নিজের লোক বসিয়েছে অপারেটরের চেয়ারে।
ওয়ারিশ গোপন, বেদখলি নামজারির জন্য কন্ট্রাক করে মোহাম্মদ আলী।ভুক্তভোগীরা বলেন, মোহাম্মদ আলীর পেছনে এক বড় নেতার হাত থাকায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নাই কারো।
এ ভূমি দালালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় তার অপকর্মের সংবাদ প্রকাশিত হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় আলী। তার নামে রয়েছে প্রতারণা,নারী নির্যাতন সহ একাধিক মামলা। স্থানীয়রা বলেন, দালাল মোহাম্মদ আলী এবং সহযোগী আবু সাইদ মিলে ভূমি দখল, নামজারির নামে সাধারণ মানুষকে রীতিমত হয়রানি করে যাচ্ছে।
কথিত দালাল মোহাম্মদ আলীর কোন নির্দিষ্ট ব্যাবসা না থাকা সত্যেও কিভাবে তিনি ৪ টি দালান এবং ডজন খতিয়ানের মালিক হলেন তা তদন্ত করার জন্য সংলিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে স্থানীয়রা।
আমাদের অনুসন্ধানে আরো উঠে আসে, দালাল মোহাম্মদ আলী এবং সহযোগী সাইদ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একজনের দখলীয় জমি অন্যজনের নামে গোপনে নামজারি করে দেওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত স্থানীয় আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ঘঠছে অপ্রীতিকর ঘঠনা।
বাহার ছড়ার সাধারণ মানুষের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমি সেবাকে যেভাবে ডিজিটাল করে গণমানুষের দৌড়গোড়াতে পৌছে দিচ্ছে, ঠিক সে সময় মোহাম্মদ আলী ও সাইদের মত দালালদের কারণে প্রধানমন্ত্রীর এই ডিজিটাল এবং জনকল্যাণমূলক সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি করেন।
কাজেই চিহ্নিত ভূমি দালাল মোহাম্মদ আলী এবং তার একান্ত সহযোগী কম্পিউটার অপারেটর সাইদের এসব অপরাধের লাগাম টানার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছে ভুক্তভোগীরা। পর্ব: ০১
Discussion about this post