নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাসানচর পৌঁছেছে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজ। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে জাহাজগুলো ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়। দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে এগুলো ভাসানচর পৌঁছায়।
জাহাজগুলোতে প্রায় ৫০০ পরিবারের এক হাজার ৮ শত জনের মত রোহিঙ্গা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের ঘরে তুলে দেওয়া হবে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভাসানচর প্রকল্পের (আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩) উপ-প্রকল্পের পরিচালক কমান্ডার এম আনোয়ারুল কবির।
তিনি জানান, তৃতীয় ধাপে ১৮ শ’র মত রোহিঙ্গাকে পাচঁটি জাহাজে করে চট্টগ্রামে আনা হয়। এর মধ্যে চারটি জাহাজে রোহিঙ্গাদের এবং একটি জাহাজে তাদের মালপত্র বহন করা হয়।
এনজিও সংস্থা সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) এর চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা জানান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্বাবধানে আজ ও কাল ৩ হাজার ২ শত রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আনা হয়েছে। তারা নিজেদের ইচ্ছায় নাম দিয়ে ভাসানচরে আসতে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন। আমরা সরকারের সহযোগী পার্টনার হিসাবে এখানে কাজ করছি। আসার সময় কোথাও অসুবিধা হয়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার এই রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে বাসে করে আনা হয় চট্টগ্রামে।
গত ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর দুই ধাপে প্রায় ৩ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। ভাসানচরে পৌঁছানো রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৮০১ জন পুরুষ, ৯৮৭ জন নারী এবং ১ হাজার ৬৫৮ জন শিশু।

এরও আগে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত বছরের মে মাসে ভাসানচর নেওয়া হয়।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছেন।
শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
Discussion about this post