আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
অবৈধভাবে যোগাযোগ সরঞ্জাম আমদানি এবং যোগাযোগ ডিভাইস ব্যবহার করায় মিয়ানমারে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এ মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন দেশটির একটি আদালত। এছাড়া একই মামলায় তার ২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাকে আটক রাখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সু চির বিরুদ্ধে বিস্তারিত অভিযোগ আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এতে বলা হয়, রাজধানী নেইপিদোতে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে। যা অবৈধভাবে আমদানি এবং অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা হয়েছে। সাক্ষী এবং অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ, আরও তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে বব্যস্থা গ্রহণে সু চিকে আটক রাখার জন্য বুধবার (০৩ ফেব্রয়ারি) আদালতে আবেদন জানানো হয়।
আলাদা একটি নথিতে দেখা যায়, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থাপনা আইন ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ মামলা করেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, পুলিশ, সরকার এবং আদালতের কাউকে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এর আগে জানায়, দেশটির বিভিন্ন জায়গায় থাকা তাদের দলীয় কার্যালয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর দলটির কার্যালয়গুলোতে এমন অভিযানকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে এসব বন্ধের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ভূমিধস জয় পায় এনএলডি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতা গ্রহণ করেন দেশটির সেনা প্রধান মিন অং হায়ং। তবে কমিশন জানায়, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বৃহত্তর অর্থনীতির সাত দেশ অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে নির্বাচনের ফলাফলকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে জি-৭, দ্রুত রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, অবৈধভাবে আটকদের মুক্তি, মানবাধিকার এবং আইনের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানায়।
১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১৫ বছর গৃহবন্দি ছিলেন সু চি। নেতৃত্ব দেন দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনে। ২০১৭ সালে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর কারণে আন্তর্জাতিকভাবে তার ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হলেও মিয়ানমারে এখনো তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়।
মিয়ানমারের বৃহত্তর শহর ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে হাড়ি এবং কলসি বাজিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে নিন্দা জানাবেন তারা।
Discussion about this post