বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ নিহতের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
গুলিতে বুধবার রাতে নিহত মুহিবুল্লাহ মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে কাজ করছিলেন। এটাই মুহিবুল্লাহর ‘অপরাধ’ বলে মনে করছেন তার ছোট ভাই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাবিব উল্লাহ।
ঘটনার পর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে চেয়েছেন হাবিব। সেই সঙ্গে ভাই হত্যার বিচার চান তিনি।
হাবিব বলেন, বুধবার রাতে এশারের নামাজ পড়ে অফিসে গিয়েছিল মুহিবুল্লাহ। সেখানে আগেই উৎপেতে ছিলেন দুর্বৃত্তরা। প্রথমে তার সঙ্গে কথা বলেন ওরা। এরপর তার দিকে পরপর চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তিনটি গুলি লাগে তার বুকে, আর একটি ডান হাত ছেদ হয়ে বেরিয়ে যায়।
এ সময় মুহিবুল্লাহর সঙ্গে থাকা কয়েকজন রোহিঙ্গাকে ব্যাপক মারধর করেন দুর্বৃত্তরা।
হাবিব বলেন, ‘হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে আমি দ্রুত ছুটে গিয়ে দেখি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আমার ভাই পড়ে আছে। আর সেখান থেকে অস্ত্র হাতে মাস্টার আবদু রহিম ও মুর্শেদ, লালুসহ ১৫ থেকে ২০ জনকে বেরিয়ে যেতে দেখি। এ সময় তারা আমার দিকেও এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সেখান থেকে পালিয়ে রক্ষা পাই।’
যারা মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সন্ত্রাসী গ্রুপ আরএসও-এর সদস্য বলে দাবি করেন হাবিব।
বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট ১ নম্বর ব্লকের অফিসে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবউল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পজুড়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক জানান, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জড়িতদের আটকে অভিযান চলছে।
বর্তমানে ক্যাম্প এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহত ৫০ বছর বয়সী মুহিবুল্লাহর বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু এলাকার লংডা ছড়া গ্রামে। তিনি রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস এর চেয়ারম্যান ছিলেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে মংডু টাউন শিপের সিকদার পাড়া গ্রাম থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে আসেন।
Discussion about this post