কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী তাজমান হাসপাতালে মিথ্যা উপাধি ধারণ করে প্রতারণাপূর্বক চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার অপরাধে এক ভূয়া ডাক্তারকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫। এসময় তার ভাই আর এক প্রতারক পালিয়ে যায়।
গত (২৬ মে) রাত ৮ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে র্যাব-১৫ সদস্যরা পালংখালী বাজারের ইয়াকুব মোস্তফা মার্কেটের ২ য় তলায় তাজমান হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে উক্ত ভূয়া ডাক্তারকে আটক করেন।
আটক ব্যক্তি পালংখালী নলবনিয়া এলাকার সাবেক মেম্বার ও জামাত নেতা মোঃ কবির আহমদের ছেলে সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান (২৪)। অভিযানের সময় তার বড় ভাই আর এক প্রতারক আব্দুল্লাহ মোঃ মোজাহীদ রায়হান পালিয়ে যায়।
পালংখালীর উক্ত তাজমান হাসপাতাল নিয়ে জনমনে ও সচেতন নাগরিকদের মাঝে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, পালংখালী নলবনিয়া গ্রামের মোঃ কবির আহমদের চার ছেলে মিলে উক্ত হাসপাতাল খোলে দীর্ঘসময় ধরে রোগী ও স্থানীয় সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তাদের রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক রোগী সংগ্রহ করার সিন্ডিকেট।
বিশেষ করে রায়হান নামের প্রতারক ডাক্তার না হয়েও নিজেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে পালংখালী বাজারে ডাক্তারের চেম্বার খোলে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে দীর্ঘসময় ধরে। পরে খোলে বসেন তাজমান হাসপাতাল নামে কসাইখানা।
রায়হানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিন্ডিকেট তৈরী করে তাজমান হাসপাতালে রোহিঙ্গা রোগী নিয়ে এসে মোটা অংকের টাকা আদায় করার।
অপ্রোজনিয় ও বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষার নামে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এককথায় এটি হাসপাতাল নামে কসাইখানা বলা চলে। র্যাবের অভিযানের পর স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস এসেছে। শত শত মানুষ র্যাব-১৫ ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ বিল্লাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, পালংখালী বাজারস্থ ইয়াকুব মোস্তাক মার্কেটের ২য় তলায় তাজমান হাসপাতালের একটি চেম্বারে প্রকৃত ডাক্তার না হয়েও একজন ব্যক্তি চায়না থেকে পাশ করা এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারনা করে আসছিল।
তিনি বলেন, অভিযান চলাকালীন তার নিকট ডাক্তারি পাশ সংক্রান্ত সনদপত্র চাইলে তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হয়। র্যারে আভিযানিক দল ডাক্তার হিসেবে মিথ্যা উপাধি ধারণকারী বর্ণিত ব্যক্তিকে আটক করে। আটকের সময় তার চেম্বার থেকে ১ টি স্টেথোস্কোপ, ১ টি ব্লাড সুগার মাপার সেট, ১ টি সীল ও ১১ পাতা প্রেসক্রিপশন জব্দ করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উখিয়া থানায় হস্তান্তর করে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, উক্ত হাসপতালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক শিবির ক্যাড়ার আবুল আলা রোমান, এমডি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুল্লাহ মোঃ মোজাহীদ রায়হান এবং ডিরেক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন আটক প্রতারক সাঈদ মোহম্মদ ইমরান।
Discussion about this post