বিডি দর্পণ ডেস্ক :
রংপুরে অটোরিকশা চালক প্রতিবন্ধী নাজমুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) দিনভর বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও চালকরা।
বিক্ষুব্ধরা প্রায় আধাঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এরপর শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) নগরীতে আধাবেলা অটোরিকশা ধর্মঘটের ডাক দেন তারা।
এদিকে, নাজমুল ইসলাকে হত্যার মামলায় পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার রাতে নিহতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম এ ঘটনায় তাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আশরাফুল ইসলাম। তবে এ বিষয়ে আদালত কোনো নির্দেশনা দেননি।
শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড়ে ঢাকা-রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও অটোরিকশা চালকরা।
এ ছাড়া সকালে নগরীর শাপলা চত্বরে রিকশাচালক শ্রমিক লীগ এবং দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। নাজমুল হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রংপুর মহানগর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যান জাতীয় শ্রমিক পার্টি শনিবার ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দেয়।
বুধবার দুপুরে কনস্টেবল হাসানের কোর্টপাড়া ভাড়া বাসা থেকে অটোরিকশা চালক প্রতিবন্ধী নাজমুলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কনস্টেবল হাসান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে নাজমুল হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনে সড়কে বিক্ষোভ করেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও অটোরিকশা চালকরা।
বিক্ষোভের মুখে স্ত্রীসহ কনস্টেবল হাসানকে আটক করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাজহাট থানার এসআই আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে ইলাহী খানের আদালতে আসামিদের হাজির করা হয়। তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত তাদের রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।
এসআই আশরাফুল আরো বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে সুরতহাল রিপোর্টে হত্যাকাণ্ডের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
নিহত রিকশাচালক নাজমুল হোসেন লালমনিরহাটের মুস্তফির অতিপুর এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। রংপুরে আশরতপুর ঈদগাপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত হাসান আলী। তিনিও ওই এলাকার কোর্টপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করেন। নাজমুল দীর্ঘদিন থেকে হাসান আলীর ব্যক্তিগত একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন। মঙ্গলবার রাতে ওই রিকশা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী।
একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোর্টপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান।
বুধবার বিকেলে হাসানের ভাড়া বাসায় প্রতিবন্ধী নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান ও স্ত্রী সাথী রিকশাচালক নাজমুলকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
Discussion about this post