নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া:
বিশ্বকে কমলা রঙ্গে সাজিয়ে দিতে ও নারী-পুরুষের সমতা সৃষ্টি করতে, সামাজিক রীতিনীতির পরিবর্তন, নারী-পুরুষের বৈষম্যদুরীকরণ, জেন্ডার ভিক্তিক সামাজিক সমতা ও পারিবারিক সহিংসতা নিরসন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ নানা অসংগতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ১৬ দিনের কর্মসূচী “সিক্সটিন ডে” উদযাপন সম্পন্ন করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা “বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ” (বিএনপিএস)।
আন্তর্জাতিক ভাবে সারাবিশ্বে দিবসটি জমকালো ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করা হয়ে থাকে। দিবসটি ১৬ দিনের কর্মসূচী হিসেবেও পালন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ইংরেজি তারিখ পর্যন্ত ইউএন উইমেনের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) এর উদ্যোগে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৩, ৭ ও ৮ নাম্বার ওয়ার্ড়ের তিনটি (সিবিও) দলের সদস্যদের নিয়ে আলাদাভাবে উদযাপন করেন। একইভাবে সংস্থাটি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১, ৪ ও ৬ নাম্বার ওয়ার্ড়ের তিনটি সিবিও দলের সদস্যদের নিয়ে পৃথকভাবে কর্মসূচীর আয়োজন করেন।
১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসন ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, সামাজিক সমতা এবং কমলা রঙ্গের পৃথিবী সাজাতে দিবসটি উপলক্ষে পৃথকভাবে র্যালী, মানববন্ধন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান, নাটক ও পুরুষ্কার বিতরণ করা হয়।
গত ২৫ নভেম্বর উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন ৭নাম্বার ওয়ার্ড় থেকে শুরু হওয়া ১৬ দিনের কর্মসূচী ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং রবিবার টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৬ নাম্বার ওয়ার্ড়ের ঝিমংখালী এলাকায় শেষ হয়।
রবিবার দিনব্যাপী টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৬ নাম্বার ওয়ার্ড়ের ঝিমংখালী এলাকায় দাতা সংস্থা ইউএন উইমেনের আর্থিক সহায়তায় বেসরকারি সংস্থা বিএনপিসের উদ্যোগে ও স্থানীয় সাম্য সিবিও দলের আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। সমাপনী দিনে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া কর্মসূচীতে র্যালী, মানববন্ধন, আলোচনা সভা, স্থানীয় নারীদের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মঞ্চ নাটক, গান ও পুরুষ্কার বিতরণ করা হয়।
“সিক্সটিন ডে” উপলক্ষে আয়োজিত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সঞ্চিতা মল্লিক, ঝিমংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এডভোকেট জাকরিয়া, বিশিষ্ট সমাজসেবক নুরুল হোসেন, জাফর আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাম্য সিবিও দলের সভাপতি মরজিনা আক্তার।
এদিকে গত শনিবার হোয়াইক্যং জোয়ারিয়া খোলা নামক এলাকায় দিনব্যাপী কর্মসূচীটি পালন করা হয়। শান্তি সিবিও দলের সভাপতি রত্না বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সঞ্চিতা মল্লিক, এনজিও সংস্থা আরটিএমের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর নাসরিন আক্তার মনিকা, ইউপি সদস্য আবুল হাসেম, নারী সদস্য ছেনুয়ারা বেগম, বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজান মোরশেদ, শিক্ষক শহিদুল ইসলাম, শান্তি সিবিও দলের সাধারণ সম্পাদক ভবনী ধর প্রমূখ।
১৬ দিনের কর্মসূচীর অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম অফিসার মশিউর রহমান। এসময় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগণ, যুবক-যুবতি, কিশোর-কিশোরীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
১৬ দিনের কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে সমাজের প্রচলিত রীতি যা নারী-পুরুষের পার্থক্য তৈরি করে, তার মাধ্যমে শক্তির ব্যবধানের সৃষ্টি হয়, আর শুরু হয় নারী ও কন্যাশিশুদের উপর নির্যাতন। এই প্রথাকে চ্যালেঞ্জ করতে নারী ও কন্যাশিশুদের ভুমিকা অপরিসীম, কারন তারাই আগামী দিনের সমতার সমাজ প্রতিষ্ঠা করবে।
প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে বিশ্বের প্রতিটি দেশের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশেও সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা গুলো নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ বন্ধ, নারী-পুরুষের সমতা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।
Discussion about this post