আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতে নভেল করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
দেশজুড়ে তিন হাজার টিকাদান কেন্দ্র একযোগে ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতি সেশনে ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ খবর জানিয়েছে।
টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনের আগে মোদি বলেন, ‘মানবিক প্রটোকল মেনে ভারতের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। যাঁরা সর্বাধিক ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাঁদের আগে টিকা দেওয়া হচ্ছে। কোভিড-১৯-এর টিকা আগে পাওয়ার দাবিদার আমাদের স্বাস্থ্য সেবাকর্মী ও সম্মুখযোদ্ধারা।’
প্রথম টিকা দেওয়া হয় রাজস্থান রাজ্যের জয়পুর স্বামী মান সিং মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুধীর ভান্ডাইকে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রদেশে একটি হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী এবং একজন সেবিকাকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেছেন, তিন কোটি স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখযোদ্ধাকে প্রথম দফায় টিকার আওতায় আনা হবে।
৭০০ জেলার দেড় লাখ কর্মীকে টিকাদান কার্যক্রম সফল করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এরপর আরো ২৭ কোটি ভারতীয় নাগরিককে করোনার টিকা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ৫০ বছরের বেশি বয়স্করা অগ্রাধিকার পাবেন। তারপরে ৫০ বছরের কম অথচ যাদের শরীরে একাধিক রোগ রয়েছে, তারা করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
করোনা নিয়ন্ত্রণে দুটি টিকাক জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন দিয়েছে ভারত। একটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার কোভিশিল্ড যা তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট ও অন্যটি ভারত বায়োটেক ও আইসিএমআর-এর তৈরি কোভ্যাক্সিন।
গণটিকাদান কার্যক্রমের জন্য নির্দেশিকা
এরই মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই গণটিকাদান কার্যক্রমের জন্য সাধারণ মানুষের উদ্দেশে একগুচ্ছ নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে ভারত। বেশ কিছু নিয়ম মেনে সাধারণ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব ব্যক্তিদেরই করোনার টিকা দেওয়া হবে। টিকার দুই ডোজের মধ্যে কমপক্ষে ১৪ দিনের ব্যবধান রাখতে হবে। দ্বিতীয় ডোজটি, প্রথম ডোজের কোম্পানিরই হতে হবে। অন্য কোনো কোম্পানির হলে চলবে না। যাঁদের অ্যালার্জি রয়েছে বা করোনা টিকার প্রথম ডোজের পর অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ পাবেন না।
একই সঙ্গে গর্ভবতী নারী ও শিশু দুধ পান করে এমন মায়েদের এই গণটিকাদান প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া চলবে না। যেসব রোগী করোনা থেকে সেরে উঠেছেন, তাঁদের সুস্থ হওয়ার নির্দিষ্ট দিনের পর চার থেকে আট সপ্তাহ পরে টিকা দেওয়া যেতে পারে। যাঁরা করোনায় আক্রান্ত ও অ্যাকটিভ লক্ষণ রয়েছে, তাঁদেরও চার থেকে আট সপ্তাহ পরে টিকা দেওয়া হবে।
এ ছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগী, যাদের চিকিৎসা চলাকালীন সার্স-কোভ-২ মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি বা কোভালসেন্ট প্লাজমা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। যাঁরা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আইসিইউতে রয়েছেন বা নেই, তাদের টিকা এখনই দেওয়া যাবে না।
Discussion about this post