শহিদুল ইসলাম হৃদয়, রাঙামাটি –
পার্বত্য শহর রাঙামাটিতে ১৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিতহতে যাওয়া পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ভোট নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি শঙ্কা-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসের দিনে পার্বত্য রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পৌর নির্বাচন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ, আনসার, বিজিবি, এপিবিএন ও র্যাব বাহিনীর প্রায় ১৩শ সদস্যকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে বলে জানাগেছে। তবে এবার রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি থাকছেনা বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো।
১৪ই ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাঙামাটি পৌরসভার নির্বাচনে ৩১টি কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ৬২ হাজার ৯১৩জন ভোটার (৩৪ হাজার ২৫২জন পুরুষ ভোটার এবং ২৮ হাজার ৬৭১জন নারী ভোটার) তাদের প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা রয়েছে। ৩১টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এইজন্য নির্বাচনে ৩১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২০১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৪০২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন উক্ত নির্বাচনে।
এদিকে, নির্বাচনের দিন রাঙামাটি পৌর এলাকাজুড়ে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ১৫জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে উপরোক্ত বাহিনীগুলোর সদস্যগণ নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন, রাঙামাটি জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) তাপস রঞ্জন ঘোষ।
তিনি জানিয়েছেন, ১৪ তারিখের নির্বাচনে রাঙামাটি জেলা পুলিশের প্রায় ৮শ পুলিশ সদস্য ও তিনশো আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনে পুলিশের ১১টি বিশেষ মোবাইল টিম, ষ্ট্রাইকিং টিম-১১টি ও ৪টি ষ্ট্যান্ডবাই টিমসহ সাদাপোশাকের পুলিশ সদস্যগণ দায়িত্ব পালন করবে। প্রতি কেন্দ্রে ৭জন পুলিশ ও ৯জন আনসার মিলে ১৬জন দায়িত্বে থাকবে।
জনাব তাপস রঞ্জন ঘোষ আরো বলেন, পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াটাকে ৪টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। তারমধ্যে পানি পথের ৪টি কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারিতে রাখা, বিশেষ বিশেষ এলাকাগুলোতে ষ্ট্যাইকিং টিম মোতায়েনসহ শহরজুড়ে এপিবিএন ও র্যাবের পক্ষ থেকে টহল ব্যবস্থা থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, আমরা নির্বাচনী সকল কেন্দ্রগুলোকে সমান গুরুত্ব দিয়ে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করে শনিবার সকাল থেকে ফোর্স মোতায়েন শুরু করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে যা যা করণীয় সবই করব। আমরা আশা করছি মানুষ শান্তিপূর্ণভাবেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এই জন্য পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনী প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে নিজেদের কাজ করছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে শুক্রবার ১২ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে শহরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জনসাধারনের মোটর সাইকেল চলাচল। ভোটের পরদিন সকাল ৬টা থেকে আবার মোটর সাইকেল চলাচল শুরু হবে। তবে ১৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত অবধি চলাচল করতে পারবে অন্যান্য যানবাহন। কিন্তু ১৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সব যানবাহন চলাচল। শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের বিশেষ অনুমতি নেয়া যানবাহনসমূহ চলাচল করতে পারবে এই সময়ে।
রাঙামাটির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম মামুনুর রশীদ কর্তৃক জারিকৃত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাগেছে, ১৪ই ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থী, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪১ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৯জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতায় অংশগ্রহণ করছেন।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যেই মাঠে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ভোট নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি শঙ্কা-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে ভোটের প্রচার শেষ হয়েছে। শেষ মুহূর্তের সার্বিক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেই চিন্তায় উৎকন্ঠিত পাহাড়ের মানুষ।
Discussion about this post