শফিক আজাদ, উখিয়া –
কক্সবাজারের উখিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে চতুর্থ ধাপে (প্রথম অংশ) ভাসানচরের উদ্দেশে ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের ৩৭টি বাস।
রোববার বেলা ১২টা এবং দুপুর আড়াই টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের পথে তাদের নিয়ে ৩৭টি বাস রওয়ানা দিয়েছে। সাথে ১১টি কার্গো সার্ভিস ২টি এ্যাম্বুলেন্সসহ ৬টি সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে, শুক্রবার ও শনিবার সকালে এসব রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে বাসে করে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়।
জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে শনিবার রাত থেকেই রোহিঙ্গারা স্বপরিবারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আসতে থাকেন। রোববার সকালে সেখান থেকে ২ হাজার রোহিঙ্গাকে দেখা গেছে। তারা সকালে এবং দুপুরে বাসে করে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের নাম নিবন্ধন চলছে। যাদের নিবন্ধন সম্পন্ন হচ্ছে তাদের মালপত্র কার্গোতে তুলে পরিবারের সদস্যদের বাসে ওঠানো হচ্ছে। প্রথম ধাপে ২১টি বাসে তাদের ওঠানো হয়। পরে দুপুরে আরো ১৬টি বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে, রোববার সকাল এবং দুপুরে বাসে ওঠা নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের বিএন শাহীন কলেজের ট্রানিজট ক্যাম্পে পৌঁছাবেন। সেখানে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষে নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সোমবার তাদের জাহাজে তোলা হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারি তারা ভাসানচরে পৌঁছবেন।
এ বিষয়ে ভাসানচর প্রকল্পের (আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩) উপ-প্রকল্পের পরিচালক কমান্ডার এম আনোয়ারুল কবির জানান, চতুর্থ ধাপে (প্রথম অংশ) হাজার খানেক রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে উখিয়া থেকে চট্টগ্রামে রওনা দিয়েছেন। দুপুরে আরো হাজার খানেক রোহিঙ্গা উখিয়া ছেড়েছেন। এবার ৩-৪ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্বেচ্ছায় আসতে রাজি হয়েছেন।
অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা জানান, ‘চতুর্থ দফায় রবিবার ৩৭ টি বাস সকাল এবং দুপুরে নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ছেড়েছেন। পরের দিন আরো ২ হাজারের মতো রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন।
এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছান। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি সকালে ১ হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গা নতুন করে ভাসানচরে পৌঁছান। এ ছাড়া অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচরে নিয়ে যায় সরকার, তারাও সেখানে রয়েছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে বাস করছেন।
Discussion about this post