নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে ৪টি ম্যাগা ক্যাম্প আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১৫ হাজারের বেশি বসতি। এঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে নিশ্চিত করা গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি। শিশুসহ মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৭ জন হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় মেলেনি। তবে বাড়তে পারে হতাহতের সংখ্যা।
সোমবার (২২ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্প- ৮-ই, ডব্লিউ থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আগুনের ঘটনার শুনার সাথে সাথে ক্যাম্পে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য উখিয়া সার্ভিসর কয়েকটি ইউনিট এক সাথে কাজ শুরু করে। তারা কয়েক ঘন্টা ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যার্থ হলে ফায়ার সার্ভিসের সাথে কাজে যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএনসহ আইনশৃঙ্খা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশন, রামু স্টেশন ও কক্সবাজার স্টেশনের ৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
বিষয়টি জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া’র ডিউটি অফিসার মিজানুর রহমান। সর্বশেষ রাত ১২টার দিকে নিয়ন্ত্রনে এসেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ ও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ শামছু-দ্দৌজা ঘটনা স্থল পরিদর্শন শেষে ৯নাম্বার ক্যাম্প ইনচার্জ এর কার্যালে সংক্ষিপ্ত মিটিং করেন। মিটিং শেষে আগুন নিয়ন্ত্রণ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দ্দৌজা বলেন, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুপুরে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। কি পরিমাণ রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে গেছে তা এখন বলা যাচ্ছে না। বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এসময় তাদের সাথে ছিলেন, সরকারি বিভিন্ন স্থরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।
অগ্নিকান্ডে ক্যাম্প ৮, ৯, ১০,১১ ক্যাম্পের মধ্যে ৯ নাম্বার ক্যাম্পের-৯৪টি ব্লকের মধ্যে ৮৬টি ব্লক ৯ হাজর ৫ শত ৮৯টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যার মধ্যে জনসংখ্যা ছিল ৩৬ হাজারের বেশি।
আর 8w ক্যাম্পে ৪টি ব্লকে-২৭টি সাব ব্লকের ৩ হাজার ঘর পুড়ে যায়। ঐ ক্যাম্পে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন একটি সূত্র। নিখোঁজ রয়েছে অসংখ্য শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ।
বাংলাদেশীদের ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগে ১০জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বলিবাজারে ১২শতের উপরে দোকান পুড়েছে ছাই হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী। ঐ সময় বালুখালীতে ২৫০টি বেশি স্থানীয়দের ঘর পুড়ে যায় বলে তিনি জানান।
এইছাড়াও ১০ ও ১১ নাম্বার ক্যাম্পে ৪টি ব্লাকের ১২টি সাব ব্লকের কয়েক হাজার ঘর পুড়ে যায়।
আগুনের সূত্র পাত নিয়ে দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। তবে একাদিক রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের দাবী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়েছে ক্যাম্পে।
স্থানীয় ইব্রাহীম আজাদ জানান, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভিতরে থাকা স্থানীয়দের ১২৭০টি দোকান ও ৫৬৩টি ঘর পুড়ে গেছে। আহত হয়েছেন অনন্ত পক্ষে ৩৫ জনের বেশি আহত হয়েছে মানুষ। এসময় গরু, ছাগল, হাস মোরগী তাদের সহায় সম্ভল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এই রিপোর্ট লেখাকালিন রাত ১২টার দিকে ২৩০টি স্থানীয় বাংলাদেশীর পরিবার বালুখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
মনিরুল হক, জামল হোসেন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশীদের ঘর বাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
এছাড়াও অসংখ্য এনজিও’র অফিস, হাসপাতাল, লানিং সেন্টার পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় ক্যাম্পের ভিতরে স্থানীয়দের ৫ শতাধিক, ১২শ বেশির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
ঘরছাড়া এসব রোহিঙ্গা রোহিঙ্গারা বালুখালী কাশেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়, টিভি রিলে কেন্দ্র সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্প, কুতুপালং, লম্বাশিয়া, মধুরছড়া, ময়নাঘোনা, জামতলী, তাজনিমারখোলা, শফিউল্লাহ কাটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।
Discussion about this post