শহিদুল ইসলাম হৃদয়, রাঙামাটি –
মৌসুমী ফল আনারস চাষে বিখ্যাত রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলা। পাহাড়ি এই জনপথে যত দূর চোখ যায় পাহাড়ি জমিতে আনারস চাষের দেখা মিলে প্রতিনিয়ত। বছরের এই সময়টাতে ফলের আবাদ করে এখানকার আনারস চাষীরা। চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে সেই আবাদি ফসলের ফল বাজারজাতকরণের উপযোগী হয়ে উঠে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আনারস চাষীরা।
আনারস চাষীরা জানান, আমাদের নানিয়ারচর উপজেলা আনারসের বাগানের জন্য অনেক বিখ্যাত এবং এই আনারস চাষ না হলে আমাদের নানিয়ারচরের মানুষ চলতে পারতো না, এই আনারসের চাষ করে এখানকার অনেক চাষী সাবলম্বী হয়েছে এবং এই আনারসের বাজারজাত করে আমরা অনেক লাভবান হয়েছি।
তারা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো ক্ষুদ্র ঋণ বা সার কীটনাশক যদি দেয়া হতো তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হতাম এবং এর থেকে আরো বেশি আনারসের ফলন বাড়াতে পারতাম।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুর ইসলাম বলেন, আমাদের এখানে সব থেকে ব্যয়বহুল হলো সার কৃষি বিভাগ বা স্থানীয় প্রশাসন যদি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় যেমন যারা গরিব কৃষক আছে তাদেরকে ক্ষুদ্র ঋণ এবং সরকারি ন্যায্য মূল্যের সার যাতে কৃষকদের দোড়গোড়ায় পৌঁছে এটাই আমাদের মূল দাবি।
এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি অফিসার ইমতিয়াজ আলম বলেন, নানিয়ারচর উপজেলা কাপ্তাই লেক বিশিষ্ট একটি পাহাড়ি উপত্যকা। এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী বা কৃষির উপর নির্ভর করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এখানে চাষীদের মধ্যে একটি বড় অংশ হলো আনারস চাষী। নানিয়ারচরে প্রায় ১২ শ হেক্টর জমিতে আনারস চাষের আবাদ করা হয়ে থাকে। এখানে প্রায় ২ হাজারের মত আনারস চাষী আছেন। এখানে আনারসের প্রধান সমস্যা হলো আনারসের পরিবহণ, বাজারজাতকরণ ও পানির সল্পতা এটা পাহাড়ি অঞ্চলের একটি কমন সমস্যা।
আমরা কৃষি বিভাগ থেকে আনারস চাষীদের বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দিয়ে থাকি বিশেষ করে আনারস চাষের ক্ষেত্রে গভীর ভাবে জমি চাষ দিতে হয়। দেখা যায়যে আমরা পাহাড়ের ঢালে যদি গভীর ভাবে জমি চাষ দেয় এটা ভূমি ধ্বসকে তরান্বিত করে, পাশাপাশি আমরা কৃষি বিভাগ থেকে আনারসের চারা রোপণের একটি গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে সরে এসে কিভাবে কন্ট্রোল পদ্ধতিতে আড়াআড়ি ভাবে আনারসের চারা রোপণের জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি। আড়াআড়ি ভাবে চারা রোপণ করলে দেখা যায়যে বহুল বৃষ্টি হলে ঐটা ভূমি ধ্বসকে আটকিয়ে দেয়। সে জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দেয় তারা যেন সোজাসুজি আনারস চারা না লাগিয়ে আড়াআড়ি ভাবে আনারস চারা গুলো রোপণ করে।
তাছাড়া আমাদের ব্লক পর্যায়ে যারা কৃষি অফিসার আছেন তারা আনারস চাষীদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এবং আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে যত ধরণের সাহয্য-সহযোগিতা আসে আমরা চেষ্টা করি যে আনারস চাষীদের সেই সুযোগ টুকু দেয়ার জন্য।
Discussion about this post