কক্সবাজার প্রতিনিধি:
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার পঞ্চদশতম সাক্ষী ছেনুয়ারা বেগম আদালতে সাক্ষ্যদান কালে বলেছেন, ‘টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ আমার স্বামী আব্দুল জলিলকে আটক করে থানার দ্বিতীয় তলায় একটি টর্চার রুমে আটকে রেখে সাত মাস নির্যাতন চালান।
পরে ওসি প্রদীপ তার দুই কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মাকে দিয়ে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। এই টাকা দেওয়ার পরও ওসি প্রদীপ আমার স্বামীকে ক্রসফায়ারে হত্যা করে।’
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যদান কালে ছেনুয়ারা বেগম ওসি প্রদীপের নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আদালতে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
আদালতের অপর সাক্ষী টেকনাফ সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য হাম জালালও তার ওপর ওসি প্রদীপের নানা নির্যাতনের বর্ননা দিয়ে জবানবন্দি দেন। এদিন আদালতে এই দুজন ছাড়াও আলী আকবর নামে আরও একজন সাক্ষ্য দেন। তবে সাক্ষী হাম জালালকে ওসি প্রদীপসহ তিন আসামির আইনজীবীরা জেরা সম্পন্ন করতে পারেননি। বুধবার তারা জেরা সম্পন্ন করবেন। আজ (মঙ্গলবার) সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের চতুর্থ পর্যায়ের প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আদালতের কার্যক্রম শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান।
অপরদিকে ওসি প্রদীপের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা মামলাকে অতি দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছেন। এতে আসামিদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল সিফাত। পরে দ্বিতীয় দফায় চার দিনে চার জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তৃতীয় দফায় তিন দিনে এ পর্যন্ত আট জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
Discussion about this post