কক্সবাজারের ঝিলংজার ১ নং ওয়ার্ডের লারপাড়া ইসলামাবাদ (উত্তরণ আবাসিক এলাকা) থেকে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এক দিনমজুর যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল ২০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাত ৮ টার দিকে স্থানীয়রা ওই এলাকার গাছের সাথে এক যুবককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ ইউনুসকে জানায়। পরে তিনি সদর থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
নিহত যুবকের নাম মোঃ সালামত উল্লাহ। সে শহরের ১ নং ওয়ার্ডের নুনিয়ার ছড়া মৃত শাহজাহান বাবুর্চির ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত সালামত উল্লাহ দীর্ঘ ৬-৭ বছর ধরে লারপাড়ার ইসলামাবাদ এলাকায় প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর মহেশখালী কুতুবজুম এলাকার আবুল হোছনের মেয়ে সুফিয়া আকতার নামে দ্বিতীয় স্ত্রী ও মাকে নিয়ে বসবাস করছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর বাপের পরিবারের লোকজন বর্তমানে লারপাড়া ইসলামাবাদ এলাকায় বসবাস করছেন। নিহত সালামত রাজমেস্ত্রীর জোগালীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার ৩ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহতের মামা বিদেশ ফেরত নুরুল বশর জানান,সালামত উল্লাহ খুব শান্তশিষ্ট ভদ্র ছেলে। সে আত্মহত্যা করার মত ছেলে নয়। তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রীর এরশাদ নামে এক ভাই ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। সে শহরের ঘোনারপাড়ায় বসবাস করে বর্তমানে। সে আমার ভাগিনা থেকে প্রায় একলক্ষ টাকা ধার নিয়েছে । সে টাকার জন্য গত বুধবার স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। সে পাওনা টাকা না দেওয়ার জন্য ভাগিনার স্ত্রী ও তার ভাইয়েরা মিলে আমার ভাগিনাকে মেরে গলাই ফাঁস লাগিয়ে দিয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমার ভাগিনা হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ইউনুস জানান, লোকজনের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থা নিহত সালামত উল্লাহ’র লাশ দেখতে পাই। বিষয়টি আমার সন্দেহ জনক মনে হলে পুলিশকে খবর দিয়। তিনি আরও বলেন, যতদূর জেনেছি বেশকিছু দিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল স্বামী স্ত্রীর মধ্যে। তার স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে ধারনা করছি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার আগের দিন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। বউ রাগ করে পাশে বাপের বাড়ীতে চলে যায়। এরই মধ্যে সন্ধ্যার সময় উত্তরণ এরিয়ার গাছের সাথে এ যুবকের লাশ দেখতে পাই। তবে মনে হচ্ছে এটা আত্মহত্যা নয় নির্ঘাত হত্যাকান্ড বটে। তারা আরও বলেন,নিহত যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে পরপুরুষের পরকিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। তার স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার জট খুলে যাবে।
নিহতের স্ত্রীর দাবী,টাকা পয়সা নিয়ে স্বামীর সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। আমি রাগ করে বাপের বাড়ীতে চলে যাওয়াতে সে আত্মাহত্যা করেছে। স্থানীয়দের দাবিকে ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দেন।
সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ সেলিম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। নিহত যুবকের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ পোস্টমর্টেমের লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট পাওয়ার পর ঘটনার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
Discussion about this post