কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক মাসে চার মাঝিকে খুনের বিষয়ে ফেসবুক লাইভে এসে বর্ণনা দিয়েছেন মোহাম্মদ হাশিম (২০) নামে এক যুবক। তিনি নিজেকে ‘ইসলামী মাহাজ’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোহাম্মদ হাশিম একটি অস্ত্র নিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন। চার মাঝির মধ্যে কাকে কীভাবে হত্যা করেছিলেন তার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন তিনি। কোথা থেকে তিনি লাইভে এসেছেন তা বলেননি হাশিম। তবে ঘরের ছবি দেখে মনে হয়েছে এটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প।
লাইভে হাশিম জানান, তার মতো ২৫ জন যুবককে অস্ত্র দিয়েছে ইসলামী সংগঠন মাহাজ। যাদের কাজ হলো হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করা। এ কাজের জন্য তাদের দেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা।
হাশিম বলেন, আমাদের মূল কাজ ছিল যারা প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করে, তাদের হত্যা করা। সম্প্রতি ৫-৬ দিনের মধ্যে আমরা তিন মাঝি ও এক স্বেচ্ছাসেবককে হত্যা করেছি।
লাইভে খুনের শিকার মাঝিদের নামও বলেছেন এই যুবক। তার দাবি, ১৮ নং ক্যাম্পের হেড মাঝি জাফর, ৭ নং ক্যাম্পের ইসমাঈল, কুতুপালং এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪-এর এইচ ব্লকের এরশাদ ও হেড মাঝি আজিমুল্লাহকে হত্যা করেছেন তিনি।
এ সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ ইসলামী মাহাজ সংগঠনের চার মুখপাত্রের নামও বলেন মোহাম্মদ হাশিম। তারা হলেন- জিম্মাদার সাহাব উদ্দিন, রহমত উল্লাহ, হেড মাঝি ভুইয়া, মৌলভী রফিক। এই চারজন এই সংগঠনের নেতৃত্ব দেন বলে জানান হাশিম।
লাইভে মোহাম্মদ হাশিম আরও জানান, তাদের সামনে আরও বড় মিশন ছিল। কিন্তু তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই এই খারাপ জগৎ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান।
এদিকে মোহাম্মদ হাশিমের সেই লাইভ ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই ভিডিও প্রচারের পর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝিসহ নেতৃস্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ইসলামী মাহাজ নামে সংগঠনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা অপকর্ম করে। তারা ক্যাম্পে বড় ধরনের নাশকতা করে। তাদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ভিডিওটা আমরা দেখেছি। এই যুবক যাদের নাম উল্লেখ করেছে, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় সবসময় প্রস্তুত আছি। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
Discussion about this post