নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী হিসেবে যেমন কক্সবাজারের সুনাম রয়েছে তেমনি বিশাক্ত মাদক ইয়াবা প্রবেশের প্রধান রুট হিসেবেও চিহ্নিত এ শহর। আছে মানব পাচারের বড় সিন্ডিকেট।
প্রতি পদে পদে আছে অপরাধের নানা চক্র। সেরকমই এক চক্রের হোতা শহর আলী। বড় কোন আইয়ের উৎস না থাকলেও আছে আলীশান বাড়ি। তার চলাফেরায় রাজার মতো ভাব।
মূলত শহরের লালদীঘির পাড়ে তার সাম্রাজ্য। যেখানে যৌনকর্মী সরবারহ ও সেসব নারীদের দিয়ে চলে মাদকের খুচরা ব্যবসা। এতে গেল ৫ বছরে কথিত শহর আলী বনে গেছেন কোটি টাকার সম্পদের মালিক।
রয়েছে পাঁচতারা, আহসান বোর্ডিং নামে দুইটি কটেজ নিয়ন্ত্রণ। যেখানে বসেই চলে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। কয়েক দফা অভিযানের পর সেখানে কিছুটা স্থবিরতা বিরাজ করলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় পুনরায় শুরু হয় এ অনৈতিক কর্মকান্ড।
অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, অন্তত অর্ধ-ডজন মাদক, মানবপাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে মামলার আসামী শহর আলী সাম্রজ্য গড়েছেন তার নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘পাঁচতারা কটেজ ও আহসান বোর্ডিংয়ে। যেখানে বসে করছেন ইয়াবার ব্যবসা।
নারী পাচার, যৌন ব্যবসাসহ নানা অপরাধ। অর্ধডজন মামলার আসামী হয়েও প্রকাশ্যে এসব কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের নাকের ডগায়।
শহর আলীর ‘পাঁচতারা কটেজ’ ঘিরে পর্যটন ব্যবসার নামে আড়ালে যৌনব্যবসা ও ইয়াবা সেবনকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কটেজে রুম ভাড়া দিয়ে মুক্তিপণ আদায়, মানবপাচার, যৌনব্যবসা ও ইয়াবা সেবন, দিনে দুপুরে জুয়ার আসর বসানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধ হচ্ছে এই আবাসিক কটেজে।
এ কটেজে দৈনিক হারে অনেক দিন ধরে চলছে টোকেন দিয়ে দেহ ব্যবসা ও ইয়াবা ব্যবসা। কিন্তু সর্বশেষ জেলা পুলিশের তৎপরতায় বন্ধ হয়েছিল। তবে পুলিশের গণবদলীর সুযোগে আবারও রমরমা ব্যবসা গড়ে উঠেছে কটেজকে ঘিরে।
দেহ ব্যবসার পাশাপাশি টাকা বেশি হলে একই সাথে সুবিধা থাকে মাদকদ্রব্যেরও।কটেজটিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বছরে ব্যবধানে বেশ কয়েকবার অভিযান চালাতে দেখা যায়। অভিযান যতক্ষণ চলে, শুধুই সেই সময়ের জন্য বন্ধ থাকে অবৈধ ব্যবসা।
অভিযান শেষ হতে না হতেই ফের শুরু হয় আগের মতোই নারী আর ইয়াবা সেবনের আড্ডাস্থল। আরনির্ভয়ে এসব ব্যবসা চালিয়ে যেতে কটেজটির মালিক শহর আলী প্রতিনিয়ত আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তাদের মাসোহারা দিচ্ছে। প্রশাসনের সোর্স থেকে শুরু করে দলীয় নেতাদেরও ব্যবহার করছে অনৈতিক ব্যবসা সামাল দিতে।
এদিকে গত ৬ মাস আগেও সদর মডেল থানা পুলিশের নেতৃত্বে ৩০টি কটেজে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ৭৩ জনকে আটক করেছিলেন। আটকের পর যাচাই-বাচাই শেষে ৫৩ জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা করে পুলিশ।
কিন্তু সে মামলায় আসামীর তালিকায় রহস্যজনকভাবে কেটে যায় আলোচিত শহর আলীর নাম। এসব বিষয়ে অর্ধডজন মামলার আসামী শহর আলী। যার সব ধরণের আইনি নথি এ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
মাদকের মামলা থাকার কথা স্বীকার করে শহর আলী এ প্রতিবেদককে বলেন, ব্যবসা করেই টাকা কামিয়েছি সৎপথে। আমার ভাল থাকা এবং পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে আমাকে হেয় করতে একটি চক্র কাজ করছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস বলেন, এ অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছি।
কিন্তু একটি চক্র পুনরায় সেখানে একই ধরণের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি মাথায় নিয়ে নতুন করে চালানাে হবে বলেও জানান ওসি।
Discussion about this post