সম্প্রতি পেকুয়া উপজেলার মগনামায় আলোচিত ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সংবাদ সম্মেলন ও তদন্ত কার্যক্রম বিষয়ের বরাত দিয়ে পর পর দুই দিন দৈনিক কক্সবাজার, আজকের কক্সবাজারসহ বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইনে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমকে জড়িয়ে প্রকাশিত মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রনোদিত, মানহানিকর, বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য ও সংবাদ আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমাকে (ওয়াসিম) জড়িয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা বক্তব্য ও সংবাদের আমি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
প্রকাশিত সংবাদের বক্তব্যে আমি ওয়াসিমকে যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর দেহরক্ষি, জয়নাল হত্যা ওয়াসিমের অন্তঃকোন্দল এবং জয়নাল হত্যা মামলায় নিরীহ আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের আসামী করা হয়েছে বলে মগনামার চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমকে দায়ী করা হয়েছে।
যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রনোদিত, হাস্যকর, মানহানিকর, বিভ্রান্তিমূলক, মামলার তদন্ত কার্যক্রমে চাপ ও প্রভাব বিস্তার করে মূল ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে খুনের আসামীদের বাঁচানোর অপকৌশল মাত্র।
আমি (ওয়াসিম) কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সংবাদ সম্মেলন ও তাদের নিজস্ব তদন্ত কার্যক্রমে উপস্থিত শ্রদ্ধাভাজন নেতাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে জানাতে চাই যে, আমি (ওয়াসিম) কখনও যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর দেহরক্ষি ছিলাম না। দেহরক্ষীতো দূরের কথা তার সাথে কখনও সরাসরি সাক্ষাতও হয়নি।
এছাড়া আমি (ওয়াসিম) ২০০১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম, এই বয়সে মীর কাশেম আলীর বডির্গাড থাকার বিষয়টি সম্পূর্ণ হাস্যকর ও অবাস্তব ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি শুধুমাত্র আমার প্রতিপক্ষের অপপ্রচার মাত্র।
দ্বিতীয়ত: ব্যবসায়ী জয়নাল হত্যাকান্ড প্রকাশ্যে ফুলতলা বাজার ষ্টেশনে শত শত মানুষের সামনে ঘটে যাওয়া একটি নারকীয় হত্যাকান্ড। হত্যাকান্ডের শিকার জয়নালের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় বাদি নিশ্চয় জেনেশুনেই ঘটনায় জড়িতদের আসামী করেছেন।
তা সম্পূর্ণ বাদির নিজস্ব ব্যাপার। সেখানে আমার (ওয়াসিম) দূরতম সংশ্লিষ্ঠতাও নেই। তবে একজন সচেতন শান্তিপ্রিয়, আইনমান্যকারি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান হিসেবে যেকোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান। একই কারণে আমি (ওয়াসিম) জয়নালের নৃশংস খুনের সাথে জড়িতদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি চাই।
একই সাথে মামলা দায়েরের পর প্রকাশ্যে ও গোপনে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিতকল্পে আদালতে সোপর্দ করা তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তদন্ত কার্যক্রমে চাপ ও প্রভাব বিস্তার করা কোন মহলের উচিত নয়। মামলায় নিরীহ কোন ব্যক্তি আসামী হয়ে থাকলে তাদের বাদ দেয়ার এখতিয়ার একান্তই তদন্ত কর্মকর্তার।
পরিশেষে ঘটনাটি অযথা ঘোলাট না করে তদন্ত কর্মকর্তার উপর আস্থা রেখে তদন্ত কার্যক্রমে সহযোগিতা করা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের উচিত বলে মনে করি। এতে করে খুনের মতো একটি ঘটনায় জড়িতরা কঠিন শাস্তি পাবে আর নিরীহ লোকজন রেহায় পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
তৃতীয়ত: উক্ত ঘটনায় একটি মহল বার বার রাজনৈতিক পরিচয় টেনে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যেকোন আসামী দায় থেকে বাঁচতে এমন নানা পথ অবলম্বন করা স্বাভাবিক। কিন্তু উক্ত ঘটনা কোন রাজনৈতিক হত্যাকান্ড নয়। যতটুকু জানি আসামীর মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থিত লোকজন রয়েছে। যারা প্রায় সকলেই একাধিক মামলার আসামী ও দাগী চিহ্নিত অপরাধী।
উক্ত মামলায় নিরীহ কোন আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী আসামী হয়েছে কিনা তা স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয় অবগত রয়েছেন।
তাদের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য ও বিবৃতি আজ পর্যন্ত চোখে পড়েনি। সত্যিকার অর্থে আওয়ামীলীগের কোন নিরীহ নেতা-কর্মী আসামী হয়ে থাকলে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয় নিশ্চয় এ বিষয়ে কথা বলতেন।
মূলত: কয়েকজন বিচ্ছিন্ন লোক জয়নাল হত্যার প্রকৃত আসামীদের বাঁচানোর মিশন নিয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের শ্রদ্ধাভাজন শীর্ষ নেতাদের আমার (ওয়াসিম) বিষয়ে ভুল বুঝিয়ে মূল ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টায় জড়িত। আশা করি জেলার সম্মানিত শীর্ষ নেতারা অচিরেই তা বুঝতে সক্ষম হবেন।
এমতাবস্থায় নৃশংস জয়নাল হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, আসামী গ্রেফতার এবং মগনামার সকল অপরাধী-সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহনে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। একইসাথে কোন মহলের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য এবং সংবাদে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
নিবেদক-
শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম
চেয়ারম্যান, মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ
পেকুয়া, কক্সবাজার।
Discussion about this post