শহিদুল ইসলাম হৃদয়, রাঙামাটি –
অনির্দিষ্টকালের জন্য ইট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ায় পার্বত্য রাঙামাটিতে প্রায় শতকোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে দাবি করেছে অত্রাঞ্চলের ঠিকাদারি কাজ বাস্তবায়নের সাথে জড়িত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা। রাঙামাটি জেলা ঠিকাদার সমিতি, পরিবহন শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক ও লোড আনলোড নৌ পরিবহন শ্রমিক সমিতির আয়োজনে বৃহস্পতিবার রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাঙামাটিতে চলমান শতকোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন থমকে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, রাঙামাটির সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করতে পার্শ্ববর্তী রাঙ্গুনিয়ার ইটভাটাগুলো থেকে ইট ক্রয় করে আনতে হয়। কিন্তু গত ২৭শে ফেব্রুয়ারী থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ইটভাটাগুলোতে ইট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে করে রাঙামাটিতে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধের পাশাপাশি শত শত দিন মজুর শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ইট বিক্রেতাদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে এর শক্ত প্রভাব পড়বে চলতি অর্থবছরের পাহাড়ের উন্নয়নমূলক কাজে। যথাসময়ে ইট পাওয়া না গেলে এসব প্রকল্প সমাপ্ত করা যাবে না। সামনে বর্ষা শুরু হলে আর কাজ করা সম্ভব হবে না।
আলোচনার মাধ্যমে ইটভাটা মালিকদের এ সংকটের সুষ্ঠ সমাধান হবে। নয়তো সরকারের উন্নয়ন কাজে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। ইটভাটার ছাড়পত্র নবায়ন না করা ও শুধুমাত্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইটভাটার বিরুদ্ধে মামলার কারণে চট্টগ্রাম ইট প্রস্তুত মালিক সমিতির ডাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ইট বিক্রি বন্ধ রেখেছে। দুই শতাধিক ইটভাটায় ইট বিক্রি বন্ধ থাকায় স্থবিরতা নেমে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, সময়ের পরিবর্তনে ইটভাটা আইন হয়েছে। শুরুতে ড্রাম চিমনির ইটের ভাটায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিয়েছে। পরবর্তীতে বলা হলো চিমনি ১২০ ফুট করতে হবে। তাও করা হলো। এরপর বলা হলো জিগজাগ ইটের ভাটা করতে হবে। তাও করা হলো। হঠাৎ করে আইনের সংস্কারে ২০১৬ সাল থেকে আমাদের ছাড়পত্র মিলছে না।
সারাদেশে একই অবস্থা। কিন্তু শুধুমাত্র চট্টগ্রামের ইটের ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এমন দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে একই ধরনের ইটের ভাটা রয়েছে। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইটের ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা অনেকটা এ অঞ্চলের উন্নয়ন কাজে প্রতিবন্ধকতার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা মনে করছেন সংশ্লিষ্ট্যরা।
বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে শুরু হওয়া সংবাদ সম্মেলনে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আলী আজগর, সাধারণ সম্পাদক সেকান্দর আলী, মাঝি মোল্লা সমিতির মোঃ শাহজাহান, রাঙামাটি শ্রমিক কল্যাণ সমিতির মোঃ আব্দুস সাত্তার, রাঙামাটি ট্রাক টার্মিনালের ইজাদার ও ঠিকাদার মোঃ ছাওয়াল উদ্দিন, রাঙামাটি ব্যবসায়ী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, ছাত্রনেতা নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post