শরীফ আজাদ :
কক্সবাজারের উখিয়া হরিণমারা, বাগানের পাহাড়, বড় খাল ও তুতুরবির এলাকায় অবৈধ মাটি-বালি পাচারকারি এবং ডাম্পার মালিক সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে পুরো এলাকার মানুষ।
সিন্ডিকেটের রয়েছে প্রায় দুই শতাধিক ডাম্পার। বনবিভাগ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে একেরপর এক পাহাড় কর্তন, মাটি পাচার, ইজারা ব্যতিরেখে খাল থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) সরজমিন পরিদশর্ন করে দেখাযায়, উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা, বাগানের পাহাড়, বড় খাল, তুতুরবির এলাকায় বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে৷
স্থানীয়রা বলেন, এই এলাকায় পাহাড় খেকো ও বালু উত্তোলন কারি একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা বনবিভাগ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পাহাড়ে ড্রেজার মিশিন বসিয়ে পাহাড়কে শরবত বানিয়ে কৃত্রিম বালী তৈরি করে।
যদিও অধ কোটি টাকা দিয়ে এই সিন্ডিকেট হিজলিয়া খাল ও বড় খাল ইজারা নিয়েছে, আসলে এই দুটি খালে কোনদড় বালি নেই। খাল ইজারার নামে তারা পাহাড়ের মাটিকে বালি বানিয়ে বিক্রয় করছে। বনবিভাগের কর্মকর্তার আসলে দুইশত থেকে পাঁচশো টাকা দিলে চলে যায়।
সাংবাদিকরা পরিদশর্নে গেলে উক্ত সিন্ডিকেটের জালিয়া পালং সোনাইছড়ি এলাকার হেলাল উদ্দিন নামের একজনের ডাম্পার গাড়ী পালাতে গিয়ে মাটি ভর্তি ডাম্পারটি উল্টিয়ে দেয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আরো জানা যায়, এখানে বিশাল একটি সিন্ডিকেট হয়েছে। তাদের সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছে-রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণ মারা ও বাগানের পাহাড় এলাকার মাহম্মদ কোম্পানি,বদিউল আলম, গফুর কোম্পানি, জহির কোম্পানী,দুছুড়ি এলাকার বিকাশ মাহমুদুল হক, ছৈয়দ করিম, মাস্টার কবির আহমেদ, বাগানের পাহাড় এলাকার বদু প্রকাশ ফিটিং বদু, শাহ আলম, খালখাছা পাড়ার মোঃ মুস্তাফিজ, মুফিজ, জাদিমোরা এলাকার সাইফুল কবির, আলিমোরার জামাল, হিজলিয়া মাজর পাড়া এলাকার মৌলভী রেজা।
তাদের সহযোগি হিসেবে রয়েছে হিজলিয়ার আব্দুল্লাহ, হেলাল, রশিদ, উত্তর পুকুরিয়ার, প্রফেসর বেলাল, তুতুরবিলের সালাহ উদ্দিন, কুতুপালং এলাকার মংচানু বড়ুয়া। এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দুই শতাধিক অবৈধ ডাম্পার (মিনি ট্রাক)।
তাদের মধ্যে আবার আলাদা ভাবে বনবিভাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্যদের মাঝে। এলাকা ভিত্তিক যারা দায়িত্বে আছেন তাদের মধ্যে তুতুরবিল বনবিভাগ নিয়ন্ত্রণ করেন মোঃ নুরু ও মোঃ জামাল উদ্দিন, বাগানের পাহাড় নিয়ন্ত্রণ করেন, বদু ও মাহম্মদ, হরিণ মারা এলাকার নিয়ন্ত্রণ করেন গফুর কোম্পানি ও আক্তার।
প্রশাসন ও বনবিভাগ নিয়ন্ত্রন করেন মৌলভি রেজা।
বনকর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, আমাদের লোকবল সংকট, আমরা যখন যেখানে খবর পাচ্ছি অভিযান চালাচ্ছি। আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। উখিয়ায় ৮৫ % ঘরবাড়ি সরকারি বনভুমিতে আমাদের করার কিছু নাই।
উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তাজ উদ্দিনের কাছে মোটো ফোনে বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি জানান, আমি সবে মাত্র উখিয়াতে যোগদান করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post