ফারুক আহমদ, উখিয়া:
কক্সবাজারের উখিয়া জালিয়াপালং বনবিটের জুম্মা পাড়ায় সামাজিক বনায়ন নিধন করে ইয়াবা পল্লী গড়ে তুলেছে ভূমিদস্যুরা। ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী সদস্যরা ইউএনও এবং ওসি বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। খোদ জালিয়াপালং বিট অফিসার ঘটনা সত্যতা স্বীকার করেন।
গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ইনানী রেঞ্জের আওতাধীন জালিয়াপালং বনবিটে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা সামাজিক বনায়ন সাবাড় করে সরকারি পাহাড় জবর দখলে মেতে উঠেছে।
অভিযোগে প্রকাশ পাইন্যাশিয়া গ্রামের আব্বাস উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম ও নুর আলীর পুত্র আবদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল ভূমিদস্যু জুম্মাপাড়া এলাকায় সামাজিক বানায়ন নিধন করে প্লট বানিয়ে ক্রয়-বিক্রি করে যাচ্ছে।
সচেতন নাগরিক সমাজ জানান ইতিমধ্যে ৪০ একের মত সরকারি বনভূমি জবরদখল করে ১৬ টি প্লট বানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। প্রতিটি প্লট ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জালিয়াপালং বিট অফিসার মোহাম্মদ ইসরাইল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বনবিভাগ একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
শুধু তাই নয় সরকারি বনভূমি জবর দখলকারী নজরুল ইসলাম ও আব্দুর রহমানসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭-২০১৮ সালের জুম্মাপাড়া সামাজিক বনায়ন নিধন করে ইয়াবা পল্লী গড়ে তুলেছে। সঙ্গবদ্ধ ইয়াবা কারবারি সিন্ডিকেট সদস্যরা বনবিভাগের জাগায় অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে বসবাস করার নামে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের নিরাপদ আস্তানা গড়ে তোলার ঘটনা এখন সবার মুখে মুখে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে জানিয়েছেন টেকনাফ সাবরাং ও শাহপরীরদ্বীপের চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিরা প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া করে থাকে এই পল্লীতে।
এদিকে সামাজিক বনায়ন নিধন করে ইয়াবা পল্লী গড়ে তোলার ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় নাগরিক সমাজ এসব মাদকের পল্লীর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ ও উখিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সনজুর মোরশেদ বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।
বর্তমানে বনদস্যুরা বনবিভাগের সামাজিক বনায়ন ধ্বংস করে প্লট তৈরি ও বিক্রি ওপেন সিক্রেন্ট হয়ে দাড়িয়েছে। এমনকি বনবিভাগ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও পরের দিন পুনরায় স্থাপনা গড়ে তুল হয়েছে। বলতে গেলে ভূমিদস্যুদের তান্ডব লীলায় বনবিভাগও জিম্মি হয়ে পড়েছে।
সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীর সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, বনজ সম্পদ ধ্বংস করে ইয়াবা পল্লীতে ঘর তোলার ঘটনা নিয়ে তারা চরম আতঙ্কিত ও শংকিত জীবন যাপন করছেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Discussion about this post