বিশেষ প্রতিনিধি :
ইয়াবা, মাদক সহ নানান অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগের পর সম্প্রতি জামিনে এসে কুতুপালং হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিপরীতে বনভূমির জায়গায় গড়ে তুলা আলিসান বাড়ীতে বসে ফের ইয়াবা ও মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়েছে রোহিঙ্গা জিয়াবুল হক। সে উখিয়ার কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গা৷
সূত্রে জানা গেছে, জিয়াবুল হক এক সময় কুতুপালং বাজারে দ্বিতল একটি ভবনে ভাড়া থাকতেন। তার স্ত্রী হালিমা রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের বাসিন্দা হলেও তারা দুইজন থাকেন সরকারি বনভূমিতে গড়ে তুলা নিজস্ব বাড়ীতে। তার স্ত্রীর এমআরসি নং- ২০৩৫২, ব্লক- ডি, শেড নং- ১৯, রুম নং- ৪/৫। জিয়াবুলের পিতার নাম শামশুল আলম হলেও কখনো মো. হাকিম, আবদুল হাকিম, বলাইয়া, বলা সহ একাধিক ছদ্ম নাম ব্যবহার করে থাকেন। রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা শিবিরে রেশন বোর্ডে পিতার নাম লিপিবদ্ধ করেছেন দিল মোহাম্মদ, মাতার নাম নুর আয়েশা। আশ্চর্য্যজনক হলেও সত্য কখনো চেহেরায় দাড়ি, কখনো দাড়ি ছাড়া। ওই জিয়াবুল এক সময় মালয়েশিয়া সহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে সফর করে রোহিঙ্গাদের নামে অর্থ সংগ্রহ করতো।
বিপুল পরিমাণ অর্থ রোহিঙ্গাদের কথা বলে বিদেশ থেকে সংগ্রহ করে এনে ব্যবসা-বাণিজ্য, আলিসান বাড়ি, গাড়ি ক্রয় করে বনে যান কোটিপতি। জিয়াবুল জেলে থাকাকালীন তার সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য দেখাশোনা করেন তার ভগ্নিপতি ছব্বির আহমদ।
কুতুপালং এলাকা ঘুরে বিভিন্ন রোহিঙ্গা ও স্থানীয় এবং তার নবনির্মিত বিলাস বহুল বাড়ির ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র জানিয়েছে, জিয়াবুল খুবই বিচক্ষণ একজন রোহিঙ্গা যুবক। সে যেখানে যে সময় অবস্থান করে, সেখানকার প্রভাবশালী লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে অবৈধ ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যায় । সে নিজে আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ইয়াবা ও মাদক ব্যবসা। কতিপয় স্থানীয়দের ছত্রছায়ায় থেকে বর্তমানে দাপিয়ে বেড়ান রোহিঙ্গা জিয়াবুল। গোপন সুত্রের সংবাদের ভিত্তিতে পরিশেষে উখিয়া থানাা পুলিশ গত ২০২০সালের ৩ মার্চ ইয়াবা সহ কুতুপালং ক্যাম্প থেকে তাকে আটক করতে সক্ষম হন। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর জামিনে এসে আবারো বসে নেই। পুর্বের ন্যায় ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। কুতুপালং হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিপরীতে বনভূমির বিশাল জায়গায় গড়ে তুলা আলিসান বাড়িই হচ্ছে এখন তার ইয়াবা পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট। কুতুপালং এলাকার আরেক ইয়াবার গডফাদার জানে আলম ও মোঃ ইউনূছ আরমান তার বাহক হিসেবে কাজ করে থাকেন বলে গোপন সুত্রে নিশ্চিত করেছে৷
স্থানীয় তোফায়েল আহমদ জানান, রোহিঙ্গা জিয়াবুল হক দীর্ঘদিন ধরে জেলে থাকাকালীন ক্যাম্প কেন্দ্রিক ইয়াবা কারবার কিছুটা হৃাস পেয়েছিল, কিন্তু সম্প্রতি সে জেল থেকে এসে আবারো ইয়াবা পাচার করে যাচ্ছে।
কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের এপিবিএন এর ইন্সপেক্টর মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, আমি মাত্র যোগদান করেছি, এখনো পুরোপুরি সব কিছু জানা হয়নি৷ জিয়াবুলের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া সহকারি বন সংরক্ষক গাজী শফিউল আলম বলেন, আমি যেহেতু নতুন এসেছি তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দ্রুত খবরা-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Discussion about this post