অর্ণব মল্লিক:
পার্বত্য জেলা রাঙামাটি কাপ্তাইয়ে চৈত্র মাসের রোদে শুকিয়ে যাওয়া জঙ্গলে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুুুুড়ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি কাপ্তাইয়ে পাহাড়ের পর পাহাড়। এতে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে বনের পশু, পাখি ও বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ গাছ ।
এতে নষ্ট হচ্ছে মাটির টপ সয়েল্ট। চৈত্র-বৈশাখ মাস আসলেই প্রচন্ড খড়তাপে গাছের পাতা শুকিয়ে নিচে ঝড়ে পরে স্তুপ হয়ে যায়। এক শ্রেণীর লোক ইচ্ছায়-অনিচ্ছাই বনের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ বনের মধ্যে ফেলে দিয়ে মজা পায়।
অন্যদিকেড় জুম চাষের জন্য প্রতি বছর বনের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয় স্থানীয় জুম চাষিরা। বিভিন্ন কারনে পার্বত্যঞ্চলের রিজার্ভ বনের মধ্যে আগুন ও জুম চাষের ফলে পার্বত্যঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির পশু, পাখি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।
এর ফলে বন্যপ্রাণীর অবাসস্থল হতে বিভিন্ন শ্রেণীর প্রাণী জগৎ পার্বত্যঞ্চল হতে বিলুপ্ত হতে চলছে। পাশাপাশি অনেক ছোট, বড় সবুজ গাছ পুড়ে পশু খাদ্য বাগান ধ্বংস হচ্ছে।
পাহাড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ফলে নষ্ট হচ্ছে মাটির টপ সয়েল্ট। যার ফলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করছে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
এদিকে কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিস কর্তব্যরত লোকজন বলেন, বন বিভাগ তথা বনের পাশে, সড়কের পাশে বসবাসরত লোকজনের সংবাদ পেয়ে মার্চ ও চলতি এপ্রিল মাসে বেশির ভাগ রাত, কিংবা দিনে একাধীকবার পাহাড়ের আগুন আমরা পানি দিয়ে বন্ধ করেছি। পাহাড়ে আগুন নিভানোর সময় দেখিছি অনেক বনের পশু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক সিএমসি কমিটির সভাপতি কাজী মাকসুদুর রহমান বাবুল বলেন, এক শ্রেণীর অসাধু লোকজন অযথা পহাড়ে আগুন ও জুমচাষ করার ফলে পাহাড়ে আগুন দিয়ে বন ধ্বংস করছে।
পাশাপাশি পশু, পাখি বিলুপ্ত হতে চলছে। হুমকির মুখে পড়েছে পার্বত্যঞ্চলের বন্যপ্রাণী।
এখনো প্রতিদিন হাতি বনের খাদ্য না পেয়ে লোকালয়ে এসে মানুষের বাসা-বাড়িতে হামলা করছে খাদ্য সংকটের ফলে। তিনি এ ধরনের কর্মকান্ড যারা করছে তাদের প্রতি প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন পাহাড়ে আগুন ও জুমচাষ বন্ধ করার আহবান জানান।
এদিকে পার্বত্য চট্রগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্ (ডিএফও) বলেন, বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন বনভূমি বা পাহাড়ে কেউ আগুন দিচ্ছেনা।
কেউ আগুন দেওয়ার অপচেষ্টা করলে তাৎক্ষনিকভাবে তা প্রতিহত করা হয়। মূলত জুমচাষিগণ কর্তৃক পাহাড়ে চাষ করার জন্য আগুন দিচ্ছে। আগুন দেওয়ার ফলে পাহাড়ের উপরিভাগের মাটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মাটিতে বিভিন্ন উপকারী অণুজীব আছে সেগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হয়।
প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছপালাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ভূমির উর্বরতা নস্ট হয়। যার ফলে ভুমিধসের সৃষ্ঠি হয়। বন্যপ্রাণী খাবার সংকট দেখা দেয়, যার ফলে বন্যপ্রাণী লোকালয়ে আসে।
পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতিসাধিত হয়। পাহাড়ে আগুন না দেওয়ার জন্য স্থানীয় জনগনকে সচেতন করার পাশাপাশি পাহাড়ে আগুন দেওয়া থেকে বিরত থাকার প্রচারণমূলক কার্যক্রম করা হচ্ছে।
স্থানীয় জনগনকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চলছে যার ফলে খালি পাহাড়গুলোতে বনায়ন করা সম্ভব হবে অন্য দিকে জনগনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
Discussion about this post