ইমরান হোসাইন, পেকুয়া:
বৃদ্ধা মা মমতাজ বেগম তরমুজ খেতে চেয়েছিলেন। তাই ফল ব্যবসায়ী ছেলে গিয়াস উদ্দিন আগেভাগে ভালো তরমুজটি বাছাই করে রেখেছিলেন। রাতে দোকান বন্ধ করে তরমুজ হাতে নিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে পড়েন। তবে আজ দোকান বন্ধ করতে একটু দেরি হয়েছিল তাঁর।
তাই প্রতিবেশী মোহাম্মদ ইসমাঈলকে সাথে নিয়ে দ্রুত পায়ে বাড়ির পথ ধরেন তিনি। কিন্তু না, তাঁর আর বাড়ি ফেরা হলো না ! বেপরোয়া গতির একটি ট্রাকের চাপায় ঘটনাস্থলে মারা যান গিয়াস উদ্দিন (৩৮)। এসময় গুরুতর আহত হন তাঁর প্রতিবেশী মোহাম্মদ ইসমাঈল (৪০)।
বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের হাজী বাজারের উত্তর পাশে আঞ্চলিক মহাসড়কে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত গিয়াস উদ্দিন টৈটং ইউনিয়নের হিরাবুনিয়া পাড়ার ইসলাম আহমদের ছেলে। আহত মোহাম্মদ ইসমাঈল একই এলাকার কবির আহমদের ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ তওহিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাজী বাজারের প্রবেশপথে একটি স্পীড ব্রেকার (গতিরোধক) আছে। গরুবোঝাই একটি ট্রাক বেপরোয়া গতিতে এর কাছে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ট্রাকটি সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে পথচারী গিয়াস উদ্দিন ও মোহাম্মদ ইসমাঈলকে চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলে গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যু হয়। অপর পথচারী মোহাম্মদ ইসমাঈলকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।’
নিহত গিয়াস উদ্দিনের ভাই নুরুল আবছার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাত ১২ টার দিকে ফোন দিলে তিনি বাড়ির জন্য রওয়ানা হচ্ছেন জানান।
কিন্তু এর আধাঘণ্টা পরেই আমরা তাঁর দুর্ঘটনার খবর পাই৷ যে বাজারে তিনি ব্যবসা করেন, সে বাজার থেকে বেরুনোর আগেই ঘাতক ট্রাকটি আমার ভাইকে পিষে মারে। বাড়ি পর্যন্ত আসতে পারলো না আমার ভাই।’
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মুজিবুর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত মোহাম্মদ ইসমাঈলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গিয়াস উদ্দিনকে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক কানন সরকার বলেন, নিহত গিয়াস উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক ট্রাকটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তবে ট্রাকটির চালক হেলপার পালিয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Discussion about this post