বিবিসি বাংলা:
কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যলয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেছেন উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টা ক্যাম্পের মধ্যে ৫টা ক্যাম্পে হঠাৎ করেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে গেছে।
তাই সতর্কতার অংশ হিসেবে সরকারের চলমান লকডাউনের বিধিনিষেধগুলো আরো কঠোরভাবে সেখানে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
মি. সামছু-দ্দৌজা বলেন পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পগুলোতে এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের জেলা কক্সবাজারের দুইটি উপজেলা উখিয়া এবং টেকনাফে যে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে তার মধ্যে উখিয়ায় আছে ২৬টি আর টেকনাফে আছে ৮টি ক্যাম্প।
পরশু দিন (বুধবার) ২৭০জনের মধ্যে ৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মি. সামছু-দ্দৌজা।
“আমাদের সাধারণত এত বেশি হয় না। উখিয়ার ৪টা এবং টেকনাফে একটা মোট পাঁচটা ক্যাম্পে (সংক্রমণ) বেড়ে গেছে।
“ফুড ডিস্ট্রিবিউশন এ্যান্ড মেডিকেল ছাড়া অন্য কিছু সেখানে যাবে না। আর এক্ষেত্রেও মানুষ যত কম ব্যবহার করা যায় সেটা দেখা হচ্ছে,” বলে তিনি জানান।
“পুলিশ এবং ক্যাম্প ইন-চার্জদের বলা হয়েছে ইন্টার ক্যাম্প মুভমেন্ট রেস্ট্রিক্ট করতে। এছাড়া কমিউনিটি গ্যাদারিং যাতে না হয় তা আরো কঠোর ভাবে দেখা হবে।”
এসব ক্যাম্পগুলোর তত্ত্বাবধানে যেহেতু শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় কাজ করছে, তাই ক্যাম্পের বিষয়ে পৃথক সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে ক্যাম্পের বাইরের এলাকা এবং জনসাধারণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
বাংলাদেশে সরকার ঘোষিত যে বিধিনিষেধ আগামী ২৩ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে, কক্সবাজার জেলার উখিয়া এবং টেকনাফের ক্ষেত্রে সেটা আরো বেশি দিন বাড়ানো হচ্ছে।
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরি বলেন আজ (শুক্রবার) থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত অর্থাৎ ১০ দিন তারা টেকনাফের সাথে অন্যান্য উপজেলাগুলোর যাতায়াত বন্ধের অর্থাৎ সেখানে যাতে কেউ যেতে না পারে সে ব্যবস্থা নিয়েছেন।
“টেকনাফ উপজেলায় করোনাভাইরাসের ট্রেন্ড যেটা দেখছি সেটা বেশ ঊর্ধ্বগতি। তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া টেকনাফ থেকে কেউ বাইরে যেতে এবং বাইরে থেকে টেকনাফে আসতে পারবে না,” বলে মি. সামছু-দ্দৌজা জানান। টেকনাফের প্রবেশমুখগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলছেন মানুষের চলাচল সীমিত করার জন্য দোকানপত্র বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে উখিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ বিবিসিকে বলেছেন তারা প্রাথমিক এই কঠোর বিধিনিষেধ উখিয়ার জন্য আজ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত দিয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটা আরও বাড়ানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে উখিয়া স্বাস্থ্য অফিসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে যারা থাকেন তারা যে ক্যাম্পের মধ্যেই বসবাস করেন তেমনটা একবারেই নয়।
তাদের স্থানীয় বাজারে প্রতিনিয়ত যাতায়াত রয়েছে, আবার বিভিন্ন সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্যাম্পের ভিতরে যাচ্ছে। এখন ক্যাম্পগুলো প্রচণ্ড ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় আশঙ্কার জায়গাটা বেশি।
Discussion about this post